1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩, ১২:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নিরাপদ উপায়ে পানের বালাই দমন মাশউক এর উদ্দ্যোগে কুমারখালী উপজেলার প্রকল্প এলাকায় বিনামুল্যে “সনোফিল্টার” বিতরণ কুষ্টিয়ায় যায়যায়দিনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত দৌলতপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত ভেড়ামারায় ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু দৌলতপুরে ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধ ইটভাটায় সরবরাহের অপরাধে একজনের ৩ মাসের কারাদন্ড কুষ্টিয়ায় চালকলের দূষিত বর্জ্যে হুমকিতে পরিবেশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর বটতৈল ইউপি আ.লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক’র দাফন সম্পন্ন জিয়া ও আক্তারের তান্ডবে অশান্ত কুষ্টিয়ার হরিপুর দৌলতপুরে ফেনসিডিলসহ আটক-৩

অক্সিজেনের জন্য ছুটাছুটি

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২০ জুন, ২০২১
  • ৩৫৯ মোট ভিউ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥  ছোট্ট শিশুটির নাম মো. মুনতসির। বয়স মাত্র পাঁচ মাস। ওয়ার্ডে বেড সংকটে ঠাঁই হয়নি তাই মেঝেতে মায়ের কোলে শুয়ে। কারণ সে আজই (রবিবার) পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাই দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে তাঁর পরিবার। পাশেই ৫৫ বছরের মো. মাহবুব হোসেন বিছানায় শুয়ে আছেন। তাঁর মুখে অক্সিজেন লাগানো। আর ওদিকে মায়ের মুখে লাগানো অক্সিজেনের মাত্রা সিলিন্ডার থেকে কমে যাচ্ছে। তাই ছেলে ছুটছেন আরেকটি সিলিন্ডারের খোঁজে।

এসব চিত্র পাওয়া গেল কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইশোলসন ওয়ার্ডে। গতকাল রোববার বেলা এগারটা থেকে দুইটা পর্যন্ত দুই ঘন্টা হাসপাতালের তিনটি করোনা ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘুরে দেখলাম। আইশোলসনের তিনটি ওয়ার্ডে রোগীতে টয়টুম্বর। বেড ছাড়িয়ে মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে।

আইশোলন ওয়ার্ড সূত্র বলছে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে তিনটি ওয়ার্ডে করোনা বেডের সংখ্যা ১০০টি। রোববার দুপুর পর্যন্ত সেখানে ভর্তি আছে ১২২ জন। এরমধ্যে পজিটিভ রোগী ৯৫ জন। বাকি ২৭ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছে ১৪ জন রোগী।

হাসপাতালে রোগীর চাপের এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় (শনিবার সকাল আটটা থেকে রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত) এই হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি থাকা ১০ জন রোগী মারা গেছে। যা এযাবৎকালে একদিনে সবোর্চ্চ মৃত্যু সংখ্যা। একই সময়ে জেলায় একদিনে সবোর্চ্চ ১৬৪ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। যার বেশিরভাগ রোগী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কুষ্টিয়া পৌর এলাকায়। যদিও গত দশদিন ধরে কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ চলছে।

এত বিধিনিষেধ ও করোনা ওয়ার্ডে শষ্যা সংখ্যা বাড়িয়ে করোনা সংক্রমণের উদ্ধমূখী  কোনভাবেই কমানো যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।

তবে গত ২ জুন জেলার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম একটু আঁচ করতে পেরেছিলেন। সেইদিন করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় তিনি জেলা জুড়ে এক বা দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের জোর সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু সিভিল সার্জনের সেই সুপারিশ সেসময় প্রশাসন মেনেছিল না।

জানতে চাইলে আজ দুপুরে সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,‘ সেদিনের কথা যদি মানা হতো হয়তো আজ এই পরিস্থিতিতে নাও আসতে পারতো। তারপরও এখনও সময় আছে সবাইকে পরিস্থিতি মেনে নিয়ে ঘরে থাকতে হবে।’

হাসপাতাল সূত্র জানায়, করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অর্ধেক রোগীর ২৪ ঘন্টায় অক্সিজেন সার্পোট দেওয়া লাগছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় রোগীদের অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে রাখতে হচ্ছে। করোনা ওয়ার্ডে গত ৪০০ দিনের অধিক সময় ধরে স্বেচ্ছায় কর্মি হিসাবে কাজ করছে জেলা ছাত্রলীগের একঝাক কর্মি। নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ। রোববার দুপুরে তিনি তাঁর কয়েকজন কর্মি নিয়ে রোগীদের কাছে গিয়ে অক্সিজেন নিয়ে ছুটাছুটি করতে দেখা গেল।

জেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজ বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে সবোর্চ্চ চেষ্টা চলছে। দুপুরে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ৫০টি সিলিন্ডার হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। সেগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালে ৩৪৭টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে ১২০টি সিলিন্ডার রিফিল করা লাগছে। এভাবে যদি চলতে থাকে। তাহলে কয়েকদিনের মধ্যে অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

আইশোলন ওয়ার্ডে দায়িত্বে ছিলেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. আক্রামুজ্জামান। তিনি বলেন, রোগী হু হু করে বাড়ছে। এটা অশনিসংকেত। রোগীদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।

এদিকে করোনা রোগী ভর্তিও হার বেড়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে কোভিট ডেডিকেট করতে ও পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক এবং ওষুধ সরমঞ্জাদি দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে।

হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন বলেন, ‘কালকের মধ্যে করোনা ডেটিকেটেট ঘোষণা করা হবে। উপজেলা থেকে ১০ জন চিকিৎসককে জেনারেল হাসপাতালে আনা হচ্ছে। এবং ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীদের শহরের  দুটি হাসপাতালে স্থানন্তর করা হবে। সিভিল সার্জন এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পুরো জেলা জুড়ে গ্রামে গ্রামে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। যারা মারা যাচ্ছে তাদের অর্ধেকই গ্রামের বাসিন্দা। এবং তারা আগে থেকেই বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। করোনা ছড়ানোর প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে এটা ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। তাই সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page