বিশেষ প্রতিনিধি ॥ এক সময়ের চিহ্নিত সন্ত্রাসী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শীর্ষ চরমপন্থী সংগঠন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি হক গ্র“পের (এমএল) সক্রিয় সদস্য ও খুলনা বিভাগীয় সামরিক শাখার একদিল বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার পিয়ার আলী ওরফে পিয়োর বিরুদ্ধে আবারো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। চরমপন্থী সংগঠনের নেতা একদিল ক্রসফায়ারে নিহত হবার পর বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন পিয়ার আলী। তারপর থেকেই তার ভয়ে আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে দুধকুমরা চর থেকে চাপড়া ইউনিয়নের একাংশের সাধারন জনগন। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। প্রায় ২ যুগের বেশি সময় যাবত চরমপন্থী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন মৃত তুরাপ আলী সেখের ছেলে এই পিয়ার আলী।
সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া এলাকায় চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গনবাহিনী ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির দুই গ্র“পের নিজেদের অস্তিত্ব লড়াইয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় গ্র“পের ৩ জন নিহত হয়। একজন জাসদ গনবাহিনীর এবং অপর দু’জন বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সিংদাহ গ্রামের রেজওয়ান আলী রাজা ও পিয়ো বাহিনীর বাগুলাট ইউনিয়নের দুধকুমরা গ্রামের লতিফ চৌধুরীর ছেলে হিরো চৌধুরী। হিরো চৌধুরী পিয়ার আলীর আপন ভাগ্নে। এই সংঘর্ষের জের ধরে ১৯৯৮ সালে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের এ্যাডভোকেট পিয়ারপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন মিয়ার ছোট ছেলে সৈয়দ নূর মোহাম্মদ বাবুকে কমলাপুর বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এলাকাবাসী জানান, ১৯৯২ সালে কমলাপুর বাজারের দোকানপাটকে কেন্দ্র করে গোপালপুর পশ্চিমপাড়ার মৃত আফিল সর্দারের ছেলে বাহককে পিয়ার আলীর নির্দেশে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই মামলার আসামী ছিলেন পিয়ার আলী। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাহকের বড় ভাই নবী নেওয়াজের বাড়ি ঘেরাও করে হত্যার হমকি দেয় পিয়ার আলী। পরবর্তীতে ভয়ে মামলা তুলে নেন বাহকের বড় ভাই নবী নেওয়াজ। এ ছাড়াও পিয়ার আলীর বিরুদ্ধে আদাবাড়িয়ার লাল জমিদারকে বাশগ্রামে ও মধুপুরের বাবুকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
নিহত বাহকের ভাই মুক্তম বলেন, আমার ভাই বাহককে কমলাপুর বাজার থেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেছে পিয়ার আলিসহ তার লোকজন। সেই মামলায় পিয়ার আলী আসামীও ছিলেন। পরবর্তীতে আমার ভাই নবী নেওয়াজ বাদী থাকার কারনে তার বাড়িতে পিয়ার আলী অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিলে ভয়ে আমার ভাই মামলার বাদী নবী নেওয়াজ মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়। আমার ভাই বাহক হত্যা খুনের আসামী অনেকেই র্যাব ও পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গিয়েছে। এখন পিয়ার আলীসহ ৫ জন আসামী বেঁচে রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বাগুলাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, পিয়ার আলী এখনো ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হিসেবে বহাল রয়েছে। কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুজিবুর রহমান বলেন, এ রকম কোন অভিযোগ থানাতে আসে নাই। তবে এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply