নিজ সংবাদ ॥ গত রবিবার ২৬ শে মার্চ সকাল সাড়ে টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রবিবার সকাল ৬ টায় কুষ্টিয়া কালেক্টটরেট চত্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিন ব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচীর। এর পর কালেক্টটরেট চত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ। পুস্পস্তবক অর্পন শেষে সকাল সাড়ে আটটায় কুষ্টিয়া জিলা স্কুল মাঠে জলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার খাইরুল আলম পায়রা অবমুক্ত করে এবং বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর কুজকাওয়াজে পরিদর্শন ও প্রদক্ষিন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার খাইরুল আলম। কুজকাওয়াজ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে এবং উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার খাইরুল আলম। এছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিশেষ সন্মাননা হিসাবে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এর পর দুপুর আড়াইটায় কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদানের মাধ্যমে দিন ব্যাপি কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘোষনা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক আরিফ উজ জামান, সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার আব্দুস সালাম তরফদার, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পিপি এ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মাসুম। আরো উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশসিক (রাজস্ব) নাসরিন বানু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আখতার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাহমিনা আক্তার রেইনা, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখা ) সিফাতুন নাহার, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা ) কাজী শারমিন নেওয়াজ, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (রেভিনিউ মুন্সিখানা শাখা) তানভীর হায়দার, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা) স্বরূপ মুহুরী, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী ও স্ট্যাম্প শাখা এবং নেজারত শাখা) শাহেদ আরমান, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (রেকর্ডরুম শাখা) ঈষিতা আক্তার, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ^াস এবং সদর উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা দবির উদ্দিন বিশ^াস, জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ সহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ। আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রিয় কুষ্টিয়াবাসী আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এই দিনে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। আমি বিন¤্র শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট শাহাদাৎবরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যকে। আমি স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা সহ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আতœত্যাগ কারী ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও সম্ভ্রম হারানো দুই লক্ষ মা বোনদের। সেই সাথে আমি স্মরণ করছি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ বাংলার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীরদের যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি লাল সবুজের পতাকা। কুষ্টিয়া জেলাবাসীকে উদ্দেশ্য করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ২৬ শে মার্চ বাঙালী জাতীয় জীবণে ঐতিহাসিক একটি দিন। পৃথিবীর বুকে বাঙালী জাতির জন্য এই স্বাধীন রাষ্ট্রের গৌরবউজ্জ্বল পটভূমি রচিত হয়েছিলো এই দিনে। সেদিন দেশ মাতৃকার টানে, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে জীবণ বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো অকুতভয় বাঙালী জাতি। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রাম ও আতœত্যাগের মধ্য দিয়ে বাঙালী জাতি ছিনিয়ে এনেছিলো স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা আমাদের মাথা উচুঁ করে বিশে^র বুকে নতুন স্বপ্নে বাঁচতে শেখায়। উপস্থিত সুধীবৃন্দের উদ্দেশ্য জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, সুখি সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নধ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতার পর দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করেছিলেন। কিন্তু আমাদের দূর্ঃভাগ্যে তিনি তার কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখে ছিলেন তার সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তার সময় উপযোগী পদক্ষেপ ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ আজ গৃহহীন মুক্ত হাওয়ার পথে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা, উন্নয়নের রোল মডেল, হাজারো বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে মাথা উচুঁ করে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। উন্নয়নের মহাসড়কে দূরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে আমাদের দেশ। কুষ্টিয়া জেলাতেও এই দৃষ্টান্ত ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান। কুষ্টিয়া জেলাবাসীর উদ্দেশ্য জেলা প্রশাসক বলেন, প্রিয় কুষ্টিয়াবাসী আরো উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ অগ্রসর হচ্ছে। সেখানে যদি আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে যথাযথ ভাবে সততা, নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সাথে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতে পারি তবেই আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া স্পর্শ করেছে আমাদের জীবণের প্রতিটি স্তরে। প্রাধানমন্ত্রীর ভিষন ২০৪১ সনের মধ্যে সুখী সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে আমাদের সাইকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। আর কেবল তখনই আমরা হবো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অংশীদার।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply