ঢাকা অফিস \ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি এবং নতুন ধরন সংক্রমণের আশঙ্কায় এ বছরও শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য পবিত্র হজের অনুমতি সীমিত রাখার পরিকল্পনা করছে সৌদি সরকার। এর ফলে গত বছরের মতো এবারও বিশ্বের অন্য দেশের মুসলিমরা হজে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।সৌদি আরবের দু’টি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।জানা গেছে, সৌদি আরবের নাগরিক ও বাসিন্দাদের মধ্যে যারা টিকা নিয়েছেন অথবা হজের কয়েক মাস আগেই কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, কেবল তারাই এ বছর হজের অনুমতি পাবেন।অবশ্য সূত্র বলেছে, বিদেশি হজযাত্রীদের ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচনা চলছে ঠিকই, তবে তা অনুসরণ করা হবে কি না সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।সংশ্লিষ্ট দু’টি সূত্র জানিয়েছে, বিদেশি হজযাত্রীদের অনুমতি দেয়ার পূর্বপরিকল্পনা বাতিল করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের মধ্যে যারা টিকা নিয়েছেন অথবা হজের অন্তত ছয়মাস আগে করোনামুক্ত হয়েছেন, কেবল তাদেরই অনুমতি দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।একটি সূত্র বলেছে, বয়সের ভিত্তিতেও হজযাত্রীদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকবে।দ্বিতীয় সূত্রমতে, প্রথমদিকে টিকা নেয়া কিছু বিদেশিকে হজের অনুমতি দেয়ার পরিকল্পনা ছিল সৌদি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু টিকার ধরন ও কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ এবং করোনার নতুন ধরনের বিস্তার বিবেচনায় সেই পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়েছে।বিদেশিদের হজের অনুমতি না দেয়া প্রসঙ্গে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি সৌদি সরকার।করোনাভাইরাস মহামারী আসার আগে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ২৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলিম হজ করতে মক্কা-মদিনায় যেতেন। হজ ও ওমরাহ থেকে বার্ষিক প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার আয় হতো সৌদি সরকারের। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছর শুধু কয়েক হাজার স্থানীয়কে হজের অনুমতি দেয় দেশটি।সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যে ওমরাহ ও হজযাত্রীর সংখ্যা যথাক্রমে দেড় কোটি ও ৫০ লাখ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছিল দেশটি। আর ২০৩০ সালের মধ্যে ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে তিন কোটিতে নেয়ার লক্ষ্য তাদের। ২০৩০ সালের মধ্যে শুধু হজ থেকেই ৫০ বিলিয়ন রিয়াল আয় করতে চায় সৌদি আরব।একটি সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে টিকা নেওয়া কিছুসংখ্যক বিদেশিদের হজ পালনের সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু কে কোন টিকা নিয়েছেন, তা নিয়ে বিভ্রান্তি, এসব টিকার কার্যকারিতা এবং করোনার নতুন ধরন নিয়ে উদ্বেগের কারণে কর্মকর্তারা ওই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন।এ বিষয়ে সৌদি আরবের সরকারি ভাষ্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সৌদি সরকার ২০টি দেশের নাগরিকদের সে দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। তবে কূটনীতিক, সৌদি নাগরিক, চিকিৎসক ও তাঁদের পরিবারের ক্ষেত্রে ছাড় ছিল। ওই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। এ তালিকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, মিসর, লেবানন, ভারত ও পাকিস্তান রয়েছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply