ঢাকা অফিস ॥ চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া সম্ভব না হলে বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, তোমরা বাসায় বসে নিয়মিত পড়ালেখা করে সিলেবাস শেষ করবে। তার সঙ্গে সুস্থ থাকতে হবে। জীবন থেকে এক বছর চলে গেলেও কিছু হবে না, তার চাইতে সুস্থ থাকাটা বড় বিষয় বলে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আমরা চেষ্টা করছি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার। এখন সেটিও যদি না হয়, আমরা তার বিকল্প নিয়েও চিন্তা করছি। কিন্তু এখন পরীক্ষা নিতে পারব কিনা, পরীক্ষা নিতে না পারলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকলে- তার সবকিছু নিয়েই আমাদের চিন্তাভাবনা আছে।’ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলে গত বছরের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চে সংক্রমণ দেখা দেয়ার ঠিক আগেই এসএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আটকে যান। ছুটির সময় কোনো পাবলিক পরীক্ষা হয়নি। আর উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয় তাদের এসএসসি ও জেএসসির ফলের গড় করে। চলতি বছরে কয়েক দফায় স্কুল ও কলেজ খোলার দিনক্ষণ নির্ধারণ এবং প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলা হলেও মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ৩০ জনু পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় কবে নাগাদ পরীক্ষা হবে বা কিভাবে হ বে তা নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা কেবলই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই বলে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেন তাদের স্বাভাবিক পড়াশোনা বাড়িতে যেটুকু সম্ভব, সেটা যেন করে। যেখানে যেটুকু সহযোগিতা অনলাইনে বা অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে যা হচ্ছে, সেটি তো হচ্ছেই। তারপরে যতটুকু সম্ভব, তারা নিজেরা বাড়িতে পড়াশুনাটি চালিয়ে যাক। শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্ষতিটা সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি এবং এই ক্ষতিটা সারা বিশ্বেই হচ্ছে। এই ক্ষতিটা কী করে পুষিয়ে নেয়া যায়, সেই ব্যাপারেও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে যারা ২০২১ এর এসএসসি এবং এসএসসির স্টুডেন্ট, আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। ভুলপথে যাবেন না। নিজেরা বাড়িতে নিজেদের সুস্থ রাখার জন্য শারীরিক এবং মানসিকভাবে সেটির জন্য কাজ করুন। কোনো খারাপ কিছুতে নিজেদের জড়িয়ে ফেলবেন না। আপনাদের ভয়ের কোন কারণ নেই। পরীক্ষা দিতে হবে কি হবে না- সেটি পরের কথা। নিজেরা নিজেদেরকে যতটুকু শিক্ষার সাথে, নিজেদের পাঠ্যক্রমের সাথে জড়িত রাখা সম্ভব, সেটি রাখুন, সুস্থ থাকুন। আমরা চাই, আমাদের সন্তানেরা সুস্থ থাকুন।’ পরীক্ষা এক বছর না দিলে জীবনে এমন কোনো বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদেরও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হওয়ার আহবান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে আরও কী করা যায়- সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করছি আমরা।’
You cannot copy content of this page
Leave a Reply