ঢাকা অফিস ॥ দেশে গত বছরের মার্চে করোনা মহামারীর প্রকোপ দেখা দেয়ার পর থেকে এ বছরের ৭ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় সরকার প্রায় ৩০৫ কোটি টাকার মাস্ক কিনেছে। আর কিট কিনেছে প্রায় ৪৭০ কোটি টাকার। এর মধ্যে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) মাধ্যমে মাস্ক কেনা হয়েছে ২৬৬ কোটি ১৭ লাখ ২৪ হাজার টাকার, আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট কেনা হয়েছে ৪০১ কোটি ২৫ লাখ টাকার। কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্পের আওতায় মাস্ক কেনা হয়েছে ৩৯ কোটি ৯ লাখ ২২ হাজার ৩৩৩ টাকার, আরটি-পিসিআর কিট কেনা হয়েছে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ৩১ হাজার ১৪২ টাকার। এছাড়া আরেকটি প্রকল্পের আওতায় ইউনিসেফের মাধ্যমে কেনা হয়েছে ৩২ কোটি ৯০ লাখ ৭২ হাজার টাকার কিট। রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির নবম বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে, যা বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়। টিকা সংকট মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- সংসদীয় কমিটির এই সুপারিশের পর জানানো হয়, মোট ৩ কোটি ডোজ টিকা কেনার লক্ষ্যে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। উক্ত ৩ কোটি ডোজের মধ্যে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ভারত থেকে উপহার হিসেবে ৩২ লাখ ডোজ পাওয়া গেছে। চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানানো হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বৈঠকে মাস্ক ও কিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত কত টাকার মাস্ক ও কিট কেনা হয়েছে, টিকার সংকট মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, ভ্যাকসিন জিটুজি না-কি এজেন্টের মাধ্যমে আনা হচ্ছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আইসিইউ ও অক্সিজেনের বর্তমান অবস্থা এবং সম্ভাব্য সংকট থেকে উত্তরণ নিয়ে আলোচনা হয়।’ জানা যায়, তথ্য বিভ্রান্তি এড়াতে ওই বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সকল তথ্য প্রদান ও পর্যালোচনা শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দিতে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। বৈঠকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা সহজভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে তাদের পরিবারের নিকট তা পৌঁছানোর কথা বলা হয়। দেশের সকল জনগণকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে টিকা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশও করা হয়। কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, আ.ফ.ম. রুহুল হক, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন অংশ নেন। এছাড়াও বৈঠকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply