নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় করোনা রোগী শনাক্তের এ যেন এক সর্বনাশা প্রতিযোগিতা চলছে। এ প্রতিযোগিতার শেষ কোথায় তা কারো জানা নেই। মাত্র একদিনের ব্যবধানে এবার কুষ্টিয়ায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গতকাল সোমবার জেলায় ৪৩২ জন মানুষ এ মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যা করোনার ইতিহাসে এ জেলায় একদিনে আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড। মোট ১২২১টি নমুনা পরীক্ষা শেষে এই ফলাফল এসেছে। এদিন মারা গেছে ১৭ জন করোনা আক্রান্ত মানুষ। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে তিনজন। সোমবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব ও র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট মিলিয়ে মোট ১২২১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে ৪৩২টি নমুনা পজিটিভ আসে। এদিন পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার হয়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় মারা গেছে ১৭ জন করোনা রোগী। নতুন রোগীর মধ্যে কুষ্টিয়া রোগির মধ্যে সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ১০৯ জন, কুমারখালী উপজেলায় ৭৮ জন, দৌলতপুর উপজেলায় ৭৩ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় ১০২ জন, মিরপুর উপজেলায় ৩৬ জন এবং খোকসা উপজেলায় ৩৪ জন শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা রোগী শনাক্ত হলো ৯১৯৮ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৯২৬ জন। আর এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছন ২৬২ জন মানুষ। এদিকে, জেলায় করোনার এমন বাড়বাড়ন্ত অবস্থা হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই তুলনায় সচেতনতা নেই। লকডাউন কার্যকরে জেলা প্রশাসন ওজেলা পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এখানে কাজ করছে। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে নানা ছুতোই মানুষ ঘর থেকে বাইরে আসছেন। ভিড় করছেন কাঁচা বাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানে। শহরের তুলনায় গ্রামের অবস্থা আরও নাজুক। গ্রাম অঞ্চলে করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও অনেকেই নমুনা পরীক্ষা করতে চাইছেন না। গ্রামাঞ্চলে আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে তখন তাদের হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসব রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার কারণে চিকিৎসকদের আর কিছুই করার থাকছে না। এসব রোগীর অধিকাংশই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। জেলায় লকডাউন কার্যকরে আরো শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর না গেলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply