রাজবাড়ী প্রতিনিধি ॥ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বড় সাওরাইল গ্রামের মোঃ মকছেদ আলী মন্ডলের বাড়িতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায় দীর্ঘদিন থেকেই এই বাড়ীতে সন্ত্রাসীরা চাঁদার দাবীতে উৎপাত করে আসছে।
চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা মকছেদ আলীর বড় ছেলে ব্যবসায়ী ও বড় সাওরাইল ইউনিয়নের মেম্বর আরিফুল ইসলাম (আলিফ) কে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুন রাদে বিজয় বাহিনীর নাম করে মকছেদ আলী মন্ডলের পরিবারে কাছে ৭ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না পেলে তার বড় ছেলে আরিফুল ইসলামকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর মকছেদ আলীর বসতবাড়িতে এক রাউন্ড গুলি করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাদের ঘরে থাকা বঙ্গন্ধুর ছবি ভাংচুর করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা সকালে সব আলামত নিয়ে যায় এবং থানায় জিডি করা হয়। পরে বিজয় বাহিনীর অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের নামে মামলা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় দীর্ঘদিন বিজয় বাহিনীর সন্ত্রাসীরা একই নাম, মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পাংশা ও কালুখালী উপজেলার কয়েকটি এলাকায় চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেলে তাদের প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। এসব ঘটনার পর বিজয় বাহিনীর ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিজ দলের সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বিজয় বাহিনী প্রধান বিজয়। ওই বাহিনী লাগাতরভাবে আলিফ মেম্বারকে প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রাখে।
বুধবার রাতে সোয়া ১১টার দিকে দ্বিতীয় দফায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় মকছেদ আলী মন্ডলের বাড়ীতে। প্রায় ১৫ সদস্যের সন্ত্রাসী বাহিনী আলিফ মেম্বার ঘর বাদে বাড়ির সবার ঘরের দরজায় ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। এর আলিফ মেম্বারকে দরজা খুলতে বলে। দরজা না খোলায় সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি ও অস্ত্র দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ফেলে ঘরে প্রবেশ করে এবং হামলা চালিয়ে ৩ লাখ টাকার অলংকার, ১ লাখ নগদ টাকা ও ৩ টা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা আলিফ মেম্বারকে ঘরের বাইরে এনে তার মাথায় ও পায়ে আঘাত করে এবং ২ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ওই বাড়ি ত্যাগ করার চেষ্টা করে। এ সময় আলিফ মেম্বারের পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। এরই এক পর্যায়ে বাহিনী প্রধান বিজয়কে জাপটে ধরে।
অবস্থা বেগতিক দেখে সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
ধস্তাধস্তির সময় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা আলিফ মেম্বারের বাবাকে কুপিয়ে জখম করে, আরিফ মেম্বার ও তার ভাই, চাচাকে লাঠির আঘাত করে। আত্মরক্ষায় মেম্বরের পরিবারের সদস্যদের চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে প্রধানকে ফেলে রেখে সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। ক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে আটক সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান বিজয় আহত হয়। রাত ২টার দিকে কালুখালী থানার পুলিশ এসে সন্ত্রাসী বিজয়কে নিয়ে কালুখালী হাসপাতালে ভর্তি করে এবং আহত আলিফ মেম্বারসহ তার পরিবারের সদস্যদের রাতে সাধারণ চিকিৎসা করানো হয়।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply