1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

কুমারখালীতে করোনা সংক্রমণসহ রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১
  • ২২৩ মোট ভিউ

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর এলাকাসহ ইউনিয়ন পার্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস। এখন প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ ও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গেল ৩৩ দিনে কুমারখালী উপজেলায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালেও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়াও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন আরো ৫ জন। এ হাসপাতালে ৩১ জন করোনা রোগীকে ভর্তি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকুল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক উল্লেখ করে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, মানুষ এখন স্বেচ্ছায় এসে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। তাই শনাক্ত হচ্ছে বেশি। আরো পরীক্ষা করা গেছে রোগীর সংখ্যা বাড়বে। সেই সাথে তিনি বলেন, গেল এক সপ্তাহের প্রায় ৭ শো নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পাঠিয়েছি কিন্তু এখনো রিপোর্ট হাতে পাইনি। আর এই ৭ শো নমুনার মধ্যে প্রায় ৩০ ভাগ রিপোর্ট পজেটিভ হওয়ার আশঙ্কা আছে। কিন্তু রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ার কারণে উপসর্গ থাকা ব্যক্তিরা যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানোর কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকার এই রিপোর্ট পেতে বিলম্বিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিনই নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে থাকি। কিন্তু কুষ্টিয়ায় নমুনা পরীক্ষার চাপ বেড়ে গেলে তারা নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু ঢাকার রির্পোট সঠিক সময়ে পাওয়া যায়না। এমনকি উধাও হয়ে যায়। এক্ষেত্রে একই ব্যক্তিকে একাধিকবার নমুনা দিতে হচ্ছে।

উপজেলায় ঠান্ডাজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গেল কয়েকদিনে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজনিয়ে জানাগেছে, অধিকাংশ বাড়িতেই ঠান্ডাজ্বরে আক্রান্ত রোগী আছে। আর এ ধরণের রোগী ও তাদের পরিবারের লোকজনকে বাজারঘাটে ঘুরে বেড়াতে দেখাযাচ্ছে। সেই সাথে করোনা আক্রান্ত রোগী ও আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বাজারঘাটে আসতে ও কেনাকাটা করতে দেখাযাচ্ছে।

অন্যদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সের নমুনা সংগ্রহ বুথের সামনে নমুনা দিতে আসা ব্যক্তিদের ভীড় বাড়ছে। আর এদের বেশির ভাগ ব্যক্তির মধ্যে করোনা উপসর্গ রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখাগেছে, উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের হাসি-কাশি আর ঘুরে বেড়ানোর কারণে পুরো হাসপাতাল এলাকা ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। শনিবার দুপুরে গিয়ে হাসপাতালের নমুনা সংগ্রহ বুথের পাশে একটি ভ্যানের উপরে বসে ঠান্ডায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তি হাসপাতাল চত্বরেই কাশি ফেলছেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সেখানে আরো অনেক অসুস্থ্য ব্যক্তিদের আসতে এবং হাসপাতাল চত্বরে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি তাদেরকে হাসপাতালের ভিতরে যেতে এবং অন্যান্য রোগীদের উপস্থিতিতেই চিকিৎসকদের কক্ষে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

সাপ্তাহিক হাটসহ স্থানীয় পর্যায়ের তাঁতে উৎপাদিত কাডড়ের হাট, পশুহাট সহ যাবতীয় পণ্যের হাট বন্ধের কথা থাকলেও কুমারখালীতে হয়েছে তার উল্টো। খুব সকাল থেকেই সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা কঠোর লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করে শনিবার স্বাভাবিক দিনের মতোই নির্ধারিত স্থানে কাপড়ের হাট ও কাঁচামালামালের হাট বসায়। আর ওই সকল হাটে জনসমাগমও ছিলো চোখে পড়ার মত। পরে খবর  পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ হাট ভেঙে দেয়।

এদিকে, কঠোর লকডাউনের শুরু থেকে চতুর্থদিন পর্যন্ত পৌর এলাকার বাজার, সড়ক, অলিগলি ঘুরে দেখা গেছে, নিত্য পণ্যের দোকান ছাড়াও অন্যান্য দোকান পাট খোলা, আর মানুষ ঘুরছেন স্বাভাবিক দিনের মতোই। সন্ধ্যার পর থেকে রেল লাইন যেন খোশগল্পের আসরে পরিণত হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখাগেছে, কুমারখালী রেল ষ্টেশনের পশ্চিম থেকে কাজীপাড়া রেলগেটের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত মানুষের ভীড় দেখা যায়। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ও উপজেলা প্রশাসন বাজারে তৎপর থাকলেও অপ্রয়োজনে ঘুরে বেড়ানো লোকজনের সংখ্যা কমছে না। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের অভিযান, জরিমানা আদায় সহ যানবাহন আটক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়াও সেনাবাহিনী, আনসার ও স্কাউটস সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page