কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ মহামারি করোনায় কর্মহীন ছিন্নমূল মানুষের জীবনে দুর্দিন নেমে এসেছে। এরই মাঝে এসেছে খুশীর ঈদ। এই ঈদে একটা নতুন পোশাক তাদের কাছে সোনার হরিণ। তবে এখন তারা বিনা পয়সায় ঈদের নতুন জামা পাচ্ছেন। দোকানে গিয়ে কেবল পছন্দ মত পোশাকটি সংগ্রহ করলেই চলছে। হত দরিদ্রদের ঈদ আনন্দ দিতে এই শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তরুণ ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী শাকিল আহমেদ তিয়াস।
তিনি কুমারখালী ইয়াং কালেকশন, আর এন ফার্নিচার ও রাফা পাঞ্জাবি গার্মেন্টসের স্বত্তাধিকারী। কুমারখালী গণমোড় সংলগ্ন কৃষি ব্যাংকের নিচে মোবারক মার্কেটে তিনি চালু করেছেন বিনা পয়সার ঈদ পোশাকের এ দোকান। দোকানের নাম দিয়েছেন ‘ঈদ আনন্দ, মানুষের প্রতি ভালবাসা’। দোকানে শিশু থেকে সব বয়সী মানুষের জন্য নতুন জামা, গেঞ্জি, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোশাক রাখা হয়েছে। এখান থেকে একজন ব্যক্তি তার পছন্দমতো পোশাক টাকা ছাড়াই কিনতে পারছেন। পোশাকগুলো দেয়া হচ্ছে রাফা পাঞ্জাবির সহযোগিতায়। শুক্রবার (৭ মে) বিকেলে দোকানটির উদ্বোধন করেন তিয়াসের মা সুরাইয়া পারভীন। সরেজমিন দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দোকানে আগতদের বিনয়ী চিত্তে স্বাগত জানাচ্ছেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী। আগতরা দোকানে থাকা ঈদের পাঞ্জাবি, টিশার্ট, গেঞ্জি ঘুরে-ফিরে দেখছেন। পছন্দ হলেই স্বেচ্ছাসেবীরা প্যাকেট করে দিচ্ছেন পোশাক। শাকিল আহমেদ তিয়াস জানান, নতুন পোশাক ছাড়া ঈদের আনন্দ হয় না। কিন্তু এলাকার অনেক মানুষ এখন কর্মহীন। তাদের পক্ষে পোশাক কেনা তো দুরস্ত, দুবেলা ঠিকমত খাবারই জুটছে না। তাই সবার সঙ্গে ঈদের তার ছেলে সবসময় গরিব-অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে। তিনি ছেলের এই কাজে পাশে থাকার চেষ্টা করেন সবসময়। দরিদ্র ভ্যানচালক রহমত আলীর আট বছর বয়সী ছেলে শাকিলকে সঙ্গে নিয়ে দোকানে এসেছেন। নিজের জন্য একটা পাঞ্জাবি আর ছেলের জন্য একটা গেঞ্জি নিয়েছেন। ঈদে নতুন গেঞ্জি পেয়ে চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক তাদের। রহমত বলেন, লকডাউনের কারণে হাতে কাজ নেই। দুবেলা ভাত জোগাড় করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় ছেলের জন্য নতুন পোশাক যেন তার কাছে এক দিবাস্বপ্ন। বিনা পয়সার এ ঈদের দোকানের কথা জানতে পেরে ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। ছেলের ও নিজের পোশাক হাতে নিয়ে দোকানের উদ্যোক্তার জন্য দোয়া করেন তিনি।
ঈদের আগের দিন পর্যন্ত তিনি তার দোকানটি চালু রাখতে চান বলে জানান দোকানের উদ্যোক্তা শাকিল। তিনি বলেন- এখনো অবধি বিভিন্ন বয়সের ২৫০ জন মানুষ তার দোকান থেকে ঈদের পোশাক সংগ্রহ করেছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply