1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

কুষ্টিয়ার গ্রামাঞ্চলে করোনা সনাক্ত ও মৃত্যু বেড়েছে

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের চড়পাড়া গ্রামের বাবুল হোসেন। তিনি ব্যবসা করেন। কয়েকদিন আগে তার জ্বর-সর্দি, গলা ব্যাথা ও খাবারে স্বাদ চলে যাওয়াসহ নানা উপসর্গ রয়েছে। ফোনে শহরের এক চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে ওষুধ সেবন করছেন। করোনার সব উপসর্গ রয়েছে তার মধ্যে। তবে পরীক্ষা না করিয়ে বাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার আশেপাশে আরো কয়েকজনের উপসর্গ রয়েছে। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের সাইরা খাতুন। গত ১৮ জুন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে মারা যান। করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অবস্থা জটিল হলে করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ ধরা পড়ে। এরপর শেষ মুহুর্তে হাসপাতালে এসে মারা যান। কুমারখালীর কয়া ইউনিয়ন থেকে গত ১৫ দিনে প্রায় ২০ জন রোগী সনাক্ত হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই করোনা উপসর্গ নিয়ে চলাফেরা করছিলেন। পরে তারা পরীক্ষা করেন। হাসপাতালে ভর্তি  হতে হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। গত ১৯ জুন জেলায় ২৪ ঘন্টায় মারা যায় ১২জন। যাদের ৮ জন গ্রামের। গতবছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি হলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। গ্রামগঞ্জের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। তবে এসব মানুষ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হলে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যখন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে শুধুমাত্র তখনই হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করাচ্ছে। তখন বেশির ভাগ রোগীর অক্সিজেন লেভেল কমে যাচ্ছে। ফুসফুসে আক্রান্ত হচ্ছে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারি অধ্যাপক মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বসির উদ্দিনের সাথে আলাপকালে বলেন,‘ বেশ কিছু দিন ধরে গ্রাম থেকে প্রচুর ফোন আসছে। যারা ফোন করছে তাদের বেশির ভাগেরই জ্বর-সর্দি গলা ব্যাথাসহ নানা উপসর্গ রয়েছে। এসব মানুষ পরীক্ষা করাতে আসছে না। সাধারন সিজনাল অসুখ বলে এড়িয়ে যাচ্ছে। পরিবতির্তে অনেকে পরীক্ষা করানোর পর দেখা যাচ্ছে করোনা পজিটিভ। এদের থেকে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই গ্রামে পরীক্ষা বাড়ানো প্রয়োজন। সদর উপজেলার হরিণারায়নপুর গ্রামের একজন স্থাণীয় চিকিৎসক জানান, ‘গ্রামে এখন প্রায় ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দির রোগী। তাদের আরো নানা উপসর্গ রয়েছে। এরা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। পরীক্ষা করাচ্ছে না। করোনার সাথে বসবাস করছে। পরে অবস্থা জটিল হওয়ার পর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে আসছে। শহরের একজন চিকিৎসক বলেন, তার চেম্বারে গত ১০/১৫ দিন ধরে প্রচুর জ্বর-সর্দি, গলা ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রোগী আসছে। যাদের বেশির ভাগ গ্রামের। অল্প বয়সীরাও আসছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাদের করোনার আলামত মিলছে। পরে হাসপাতালে পাঠিয়ে পিসিআর ল্যাবে টেস্ট করার পর পজেটিভ আসছে বেশির ভাগ মানুষের। এটা শঙ্কার বিষয়। এসএম মাহিন নামের একজন পল্লী চিকিৎসক বলেন,‘ গ্রামে জ্বর-ঠান্ডার রোগী বেড়েছে। তারা পরীক্ষা না করেই ওষুধ খাচ্ছে। অনেকে শহর থেকে চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে।’ কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আকুল হোসেন বলেন, গ্রামেও ছড়িয়ে গেছে করোনা ভাইরাস। বিশেষ করে শহর সংলগ্ন ইউনিয়ন ও গ্রামগুলোতে প্রচুর রোগী পাওয়া যাচ্ছে। তাই গ্রামেও চলাফেরা সীমিত করতে হবে। গ্রামের অনেকেই পরীক্ষা করাতে আসছে না। তারা বাড়িতে বসে ওষুধ সেবন করছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন,‘ হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির থাকা বড় একটি অংশ গ্রামাঞ্চলের। অনেকেই খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আসছে। মৃতদের অর্ধেক গ্রামের মানুষ। গ্রামেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে রোগী।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com