নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় কঠোর লকডাউনের আরো একটি দিন অতিবাহিত হলো। জেলার সর্বত্র চলা সপ্তাহব্যাপী এই লকডাউনের ৩য় দিনেও পুলিশের কঠোর নজরদারী ছিল প্রশংসিত। শহরের সর্বত্র বাঁশ দিয়ে বেরিকেড দিয়ে সড়কে মানুষজনের চলাচলে অনুৎসাহিত করার পরেও কারনে অকারনে মানুষজনের ঘর থেকে রাস্তায় বের হওয়ার প্রবনতা কমানো যাচ্ছে না। বিজ্ঞদের মতে নিজের মন থেকে করোনা প্রতিরোধে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়ার মানষিকতা না থাকলে পুলিশ দিয়ে ঘরে রাখা সম্ভব হবে না। সচেতনতা এবং দায়িত্ববোধের স্থান থেকে মানষিকতার উৎকর্ষ সাধনই পারে করোনাকালীন সরকারের নেয়া করোনা প্রতিরোধে শতভাগ সফলতা।
দিনের শুরু থেকে ভোর এবং সকালে লোকজনের উপস্থিতিতে সড়কগুলোকে ব্যস্ত করে রাখে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সর্বত্রই মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। তবে সকাল ৯টার পর থেকে পুলিশের তৎপরতা শুরু হলে ভয়ে হলেও সাধারন মানুষের অযাচিত ঘুরাফেরা এবং রাস্তায় বের হওয়ার প্রবনতা কমে আসে। গতকাল বুধবার লক্ষ্যনীয় বিষয় ছিল পুলিশ মোড়ে মোড়ে রিকসা ও অটো রিকসা চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করাই শহরের প্রধান সড়ক এনএস রোডে পৌর বাজার সংলগ্ন এলাকা ছাড়া পুরো সড়কেই নিরবতা নেমে আসে। তার পরেও লুকোচুরি করে অনেক স্থানে রিকসা ও অটো রিকসা চলতে দেখা গেছে। মজমপুর গেটে অটো রিকসা আর রিকসা চালকদের জন্য ছিল ভীতিকর পরিবেশ। সামান্য দুরত্বেও ব্যবধানে পুলিশী বাাঁধার সম্মুখিন হওয়ায় অনেককে পায়ে হেটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। তবে অযাচিত ও বিনা প্রয়োজনে চলাচলকারী মোটর সাইকেলের সংখ্যা একেবারেই কম ছিল না। এদিকে ভীতিকর পরিস্থিতিতেও শহরের গড়াই নদীর কুল ঘেষা বাঁধে মানুষজনের উপচে পড়া ভিড় ছিল। বিকেলে এই দৃশ্য আরো ভয়ংকর দেখা গেল। বিস্তর জনগনের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার মানুষের উপস্থিতিতে সেখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি ছিল উপেক্ষিত। কে কার কথা শুনে? বাঁধের সব স্থানে নারী-পুরুষ-শিশুদের অবাধ চলাচল। অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। অনেক স্থানে জটলা করে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। সব বয়সের মানুষের জন্য ভয়ংকর পরিস্থিতি। বাঁধের আশে পাশের মানুষজনের মাঝে সচেতনতা না এলে করোনার এই লকডাউন কোন ফল আসবে না বলে মনে হচ্ছে। প্রশাসনের সারা দিনের খাটনির ফল যদি বাঁধে ঘুরাফেরাকারী মানুষজনের কারনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায় সেটির দিকে বিশেষ নজর দেয়ার সময় এসেছে। বিভিন্ন মোড় এবং পয়েন্টের চায়ের দোকান গুলোতে অহেতুক মানুষের ভিড় এখন লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে প্রতি দিনের মত গতকালও জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার খায়রুল আলম। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সাধারন মানুষকে বিনা কারনে ঘর থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেন এবং সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও মাস্ক ব্যবহারের উপর গুরুরোপ করেন। এদিকে গতকালও ডিসি কোর্ট এবং আদালতপাড়ায় সাধারন মানুষজনের চলাচল ছিল একেবারেই সীমিত। সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল কম থাকায় সেখানেও মানুষজনের চলাচল ছিল একেবারেই কম। তবে বাজারগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় এখন লেগেই আছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply