নিজ সংবাদ ॥ কঠোর লকডাউনে জনগণকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ আর প্রশাসনের সব তৎপরতায় যেন ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। লকডাউনে সব সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আসলে কি বন্ধ রয়েছে? গতকাল শনিবার সরকারী অফিস সাপ্তাহিক ছুটির আওতায় থাকলেও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রাত্যহিক কর্মকান্ড রুটিন মোতাবেক চালিয়েছে। তাদের কর্মীরা নির্ধারিত সময়ে অফিসে আসা যাওয়া এবং কর্মকান্ড চালিয়েছে। অফিস বন্ধ রেখে ভিতরে কর্মচারীরা ঠিক অফিসিয়াল কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। আর এসব কর্মীরা পুলিশকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে আবার ফাঁকি দিয়েও মোটর সাইকেল যোগে বা বিভিন্ন উপায়ে অফিসে উপস্থিত থেকেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কঠোর লকডাউনে মাঠে রয়েছে প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি। সরকারী এসব প্রতিষ্ঠানের তৎপরতা শুধুমাত্র শহরের প্রধান সড়ক ও হাইওয়ে জুড়ে আর উপজেলা শহরগুলোতে। কিন্তু শহর, শহরতলী এবং গ্রামের সব স্থানেই অলিতে গলিতে মানুষজনের সরগরম উপস্থিতি তাদের নজরে আসছে না। সকাল থেকেই বাজারগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লকডাউনের প্রথম ২দিন বৃষ্টি থাকলেও ৩য় দিন শনিবার বৃষ্টি ছিল কম তাই দেখা গেছে সাধারন মানুষকে ঘর থেকে রাস্তায় বের হওয়ার প্রবনতা। নানান অজুহাতে মানুষেরা ঘরের বাইরে আসছে। পুলিশ বাঁধার মুখে পড়ছে কিছু রিকসা ও অটো আর পাঁয়ে হাটা মানুষ গুলো কোথায় যাচ্ছে কি কাজে যাচ্ছে এসব দেখার কোন মানুষকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই অনেকেই পাঁয়ে হেটেই ঠুনকো কারনে বাইরে বের হতে পারছে। কুষ্টিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন, কঠোর লকডাউন আবার কঠোর শাট ডাউনের আওতায় রাখা হয়েছে । কিন্তু জনগন মনে করছিল প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে কিন্তু সে গুড়ে বালু? কঠোর শার্ট ডাউনে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল, রিকসা, অটো রিকসা, সিএনজি এখন চোখে পড়ার মত। শহরের মোড়ে মোড়ে ফল ব্যবসায়ী, পেয়ারা ব্যবসায়ী, ভ্যানে করে আম, পিয়াজ, কাঁচা মরিচ বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। আবার পিয়াজু, সিঙ্গারা, ভাজা পোড়ার পাশাপাশি চায়ের দোকানগুলো দিব্যি খোলা রেখে সেখানে সাধারন মানুষের যাওয়ার সুযোগ করে দেয়াতে জনগন নানান অজুহাতের সুত ধরেই ঘর থেকে বের হচ্ছে। মজমপুরগেটে বেশ কয়েকটি ফলের আড়তে ভোর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ফল ব্যবসায়ীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়ায় এসব হয়তো তাদের চোখে পড়ে না। কিন্তু করোনাকালীন মানুষের যেখানে ঘর থেকেই বের হওয়া নিষেধ সেখানে ভিড় করে ফল বিক্রি আবার সেই ফল বিভিন্ন যানবাহনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায় আবার মানুষজন ঘর থেকে বের হয়ে ঐসব ফল কিনতে বের হচ্ছে? ৩য় দিনের মত গতকাল শনিবার সকাল ৯টার পর থেকে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি’র তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। শহর এবং শহরতলীর প্রধান সড়কগুলোতে তাদের দেখা গেলেও গ্রাম এলাকায় তেমন চোখে পড়েনি। শহরের দোকানগুলোর সামনে কর্মচারীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। আবার অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে গোপনে বেচা-কেনা করতে দেখা গেছে। বিকেলে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে প্রতিদিনের মত পুলিশের গাড়ি বহর বের হয়। শহরের প্রধান সড়কের পাশাপাশি গতকাল সন্ধ্যার আগে হরিপুর এলাকা থেকে পুলিশ সুপারকে ফিরতে দেখা গেছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের দ্বারা পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত অনেক স্থানে জরিমানা আদায় করেছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply