নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় যেনো রেকর্ড ভাঙার খেলায় মেতেছে মারণ ভাইরাস করোনা। একদিনে জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩২ জন। এদিন মারা গেছে ১১ জন মানুষ।
গতকাল বুধবার কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব ও র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট মিলিয়ে মোট ৭৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে ২৩২ টি নমুনা পজিটিভ আসে। এদিন পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার হয়েছ ৩১.৬১ শতাংশ। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১১ জন করোনা রোগী। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭৩৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন শনাক্ত হওয়া ২৩২ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ৬২ জন, দৌলতপুরের ৪২ জন, কুমারখালীর ৫৯ জন, ভেড়ামারার ২৯ জন, মিরপুরের ২৫ জন ও খোকসার ১৫ জন রয়েছেন। ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটিতে এখন শয্যার চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৭৭ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ১৮৭ জন। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৯০ জন। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, শয্যা না থাকায় এখন রোগীদের মেঝেতে ও করিডোরে রাখতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগীর চাপ যেভাবে বাড়ছে তাতে সেবা দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে ।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কুষ্টিয়া জেলায় চলমান লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। ৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ১৪ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন আপাতত বলাবৎ থাকবে বলে জেলা প্রশাসন থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার কুষ্টিয়ার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
আগের মতোই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জেলায় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, শপিং মল, দোকান, রেঁস্তোরা ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় (মুদি) পণ্যের দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত স্থানে খোলা রাখা যাবে। লকডাউন চলাকালে সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ইজিবাইক, থ্রি-হুইলারসহ সব যান্ত্রিক যানবাহন বন্ধ থাকবে। এ সময় সব সাপ্তাহিক হাট ও গরুর হাট বন্ধ থাকবে। ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা, চিকিৎসাসেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা ঘর থেকে বের হবেন, তাঁদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা (কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, গণমাধ্যম, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি তেল, ফায়ার সার্ভিস) চালু থাকবে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লকডাউনের সময় সবাইকে এসব বিধিনিষেধ মেনে চলার নির্দেশ দেন। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। এ লকডাউন চলবে ১৪ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply