নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় করোনার টিকা নিতে কেন্দ্রে উপচে পড়েছে মানুষ। সেখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো প্রবণতা দেখা যায়নি। কুষ্টিয়া শহরের কলকাকলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই টিকাদান কার্যক্রম চলছে।
গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে কলকাকলি বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। তবে সেখানে সকাল সাতটা থেকে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত পরশু থেকে কুষ্টিয়ায় শুধু একটি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুই দিন ধরে কুষ্টিয়া আরপিটিআই কার্যালয় কেন্দ্রে এই টিকা দেওয়া হচ্ছিল। তবে সেখানে মানুষের ভিড় বেশি হওয়ায় রবিবার কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়।
সরেজমিন সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের কক্ষে টিকা দেওয়া হচ্ছে। কক্ষ থেকে শুরু হওয়া লাইন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাঠ এঁকেবেঁকে একেবারে প্রধান ফটকের বাইরে চলে গেছে। বাইরে ও সামনের সড়কেও এক’শ থেকে দেড়’শ মানুষের দীর্ঘ লাইন। বিশেষ করে পুরুষের চেয়ে নারীরা টিকা নিতে বেশি ভীড় করেছে। এতে বেগ পেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মিদের। আর ব্যাপক ভীড় ও গাদাগাদি করে দাঁড়ানোর ফলে গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না এক্ষেত্রে। সব মিলিয়ে অন্তত চার হাজার মানুষ (রবিবার) টিকা নিতে এই কেন্দ্রে এসেছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হলে তাঁদের মধ্যে সাতজন জানান, তাঁরা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন তিন দিন আগে। কিন্তু কোনো এসএমএস পাননি। তারপরও এসেছেন টিকা নিতে। তিনজন জানালেন, তাঁরা এসএমএস পাওয়ার পর আজ (রবিবার) টিকা নিতে এসেছেন।
টিকাদান কক্ষের সামনে বেশ বড় জটলা দেখা গেল। সেখানে পেছন থেকে কয়েকজন ব্যক্তি কক্ষের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে তাঁদের বাগবিতন্ডা হয়। টিকা নিতে আসা দিপালী বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টায় এসেছিলাম। একটু আগে টিকা দিতে পারলাম। তবে ব্যাপক ভিড়, ধাক্কাধাক্কি; একটু ব্যবস্থাপনার অভাব বোধ করলাম।’ টিকা নিতে আসা কয়েকজন জানান, একটি কেন্দ্রে টিকা না দিয়ে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে দিলে ভীড় কম হবে। এতে মানুষ সহজেই টিকা নিতে পারবে। হয়রানী ও কষ্টও কমবে সেই সাথে।
৩২৬ জনকে রোববার টিকা নেওয়ার জন্য এসএমএস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শুধু রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে টিকা নিতে এসেছে মানুষ।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র বলছে, চীন থেকে আসা টিকা প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে মাত্র ১ হাজার ৮০০ টিকা মজুত আছে। রোববার সারা দিনে ১ হাজার থেকে ১২০০ টিকা দেওয়া সম্ভব হতে পারে। কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শনিবার শুধু ৩২৬ জনকে রোববার টিকা নেওয়ার জন্য এসএমএস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মানুষ এসএমএস ছাড়াও শুধু রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে টিকা নিতে এসেছে। কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply