নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় গভীর রাতে নারীর উপর উপর্যুপরি ধারালো অস্ত্রের আঘাতসহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অভিযোগ সম্পদ লুণ্ঠন করতেই পূর্বপরিকল্পিত এই হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম ওই নারী হলেন আয়সা সিদ্দিকা জারা (২৮)। হাউজিং ডি ব্লক ৪৫৬নং ভবনের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় শহরের পুনাক ফুড পার্কে খাওয়া দাওয়া শেষে ফেরার সময় নিজ বাসার সামনে পৌছালে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। পিছন দিক থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুই পায়ের লিগামেন্টসহ রক্ত নালী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: তাপস কুমার সরকার।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই নারীর মা সদর উপজেলার বিষ্ণুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বুলুর স্ত্রী লিপি খাতুনের দাবি, শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ লাইন সংলগ্ন পুনাক ফুড পার্কে পাওনা টাকা দেয়ার জন্য আমাদের ডেকে নিয়ে যান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ। সেখানে গিয়ে দেখি রাশেদের সাথে আরও ৪ থেকে ৫ জন যুবক বসে আছে। রেস্টুরেন্টের মধ্যে রাশেদের কাছে পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেখানে খাওয়া দাওয়া সেরে রাত সোয়া ১০টার দিকে বেড়িয়ে বাসার উদ্দেশে ফিরে আসি। বাসার সামনে পৌছামাত্রই ৪জন লোক আমাদের উপর হামলা করে। হামলাকারীদের সাথে রাশেদ বা তার সহযোগীদের কোন যোগসূত্র আছে কি না সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে ওদের হামলার ধরণে মনে হয়েছে আয়সার কাছে থাকা টাকা ও বাসায় ঢুকে আরও অন্যান্য মূল্যবান মালামাল লুটপাটের জন্যই এই হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন লিপি খাতুন।
আহত ওই নারীর চাচা আব্দুর রশিদ জানান, ঘটনার পরে চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়দের সাহায্যে গুরুতর জখম আয়সা সিদ্দিকা জারাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা ভর্র্তি করলেও পরে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন।
এবিষয়ে ইবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, পুনাক ফুড পার্কে তেমন অন্য কোন বিষয় ছিলো না, আয়সা আমার ফুপাতো বোন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ফুফুসহ আয়সা সেখানে আসলে আমরা হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই বিদায় নিই। পরে আয়সার উপর কারা কিভাবে হামলা করেছে, সেটা আমি জানি না।
তবে সদর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজুর সেল ফোনে আলাপকালে জানান, রাশেদের সাথে আয়সার টাকা পয়সা লেনদেনের কিছু ব্যাপার ছিলো। কি কারণে যেন সেটা না হওয়ায় রাশেদ-আয়সার মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। পরে পুনাক থেকে বেড়িয়ে আয়সা ও তার মা লিপি খাতুনকে ওদের বাসায় নামিয়ে দিতে যায়। কিন্তু সেখানে গাড়ী থেকে নামার সাথে সাথে কিছু বুঝে উঠার আগেই আয়সার উপর হামলার ঘটনা ঘটে। আমি সেখানে গিয়েছিলাম স্রেফ স্ট্যাম্প লিখে দেয়ার জন্যে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল ইসলাম জানান, শুনেছি শুক্রবার রাতে হাউজিং এলাকায় একজন মহিলার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এবিষয়ে এখনও কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply