নিজ সংবাদ ॥ করোনাকালীন জেলার সর্বত্র বিনোদন পার্ক বন্ধ থাকলেও কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরের পার্কটি জনসাধারনের জন্য উম্মুক্ত ছিল। লকডাউনের মধ্যেও সেই কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত সর্বসাধারনের জন্য একেবারেই উম্মুক্ত ছিল। কিন্তু এতদিন পর হলেও হুশ ফিরেছে জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের। তাই গতকাল বুধবার বিকেল ৬টার দিকে পার্কে অবস্থানরত কয়েকশত নানা বয়সের মানুষকে বের করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরে একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে এই কঠিন লকডাউনের মধ্যেও কুষ্টিয়ার সর্বত্র কোচিং ক্লাস চলছে। জেলা প্রশাসককে জানানোর পরেও কোচিং সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করায় সর্বসাধনের মাঝে করোনার শংকা বেড়ে যায়।
কুষ্টিয়ায় মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে চলা লকডাউনে জেলার সর্বত্র বিনোদন পার্কগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু কালেক্টরেট চত্বরে অবস্থিত পার্কটির সব গুলো পথ বন্ধ করে দিলেও পার্কের সুম্মখভাগে দেয়া বাঁশের বেরিকেডের উপর দিয়েই দর্শনার্থীরা খুব সহজেই পার্কে প্রবেশ করতো। পার্কে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, কপোত-কপোতি এবং পরিবার পরিজন নিয়ে নানা বয়সের মানুষের উপস্থিতিতে পুরো পার্কটি কোলাহলপুর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছিল। প্রশাসনের গন্ডি ভিতরে থেকেই এই পার্কটি করোনাকালীন বেশ ঝুঁকি পুর্ণ হওয়ায় গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীরা ভিতরে থাকা সকল দর্শনার্থীদের বের করে দেন। এসময় হ্যান্ডমাইকে পার্ক থেকে বের হতে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। পরে বঙ্গবন্ধু মুর্যালের সাইডে দুটি বিজ্ঞপ্তি নোটিশের মাধ্যমে পার্কে সর্বসাধারনের প্রবেশ নিষেধ করা হয়। এদিকে লকডাউনের শুরু থেকেই জেলার সর্বত্র কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে সব কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ তাদের কোচিং বন্ধ রাখে। কিন্তুু হঠাৎ করে মে মাসের ২৭/২৮ তারিখ থেকে কোচিংগুলো পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে। বিশেষ করে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের পুরাতন ভবনের সামনে প্রায় ২০টি কোচিংয়ে নিয়মিত সকাল ৭টা থেকে কোচিং শুরু হয়ে সারাদিনই চলে কিন্তুু এইসব কোচিং বন্ধের ব্যাপারে প্রশাসনের কোন নজরদারী নেই। সরেজমিনে দেখা গেছে সরকারী কলেজের পুরাতন ভবনের সামনের রাস্তার ওপারে সব কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রীরা কোচিংয়ের ক্লাস করছে। সামজিক দুরত্বেও কোন বালাই নেই। প্রতিটি রুমে গায়ের সাথে গা লাগিয়ে চেয়ারে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে অংশ নিচ্ছে। আবার ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আসা অভিভাবকদের দেখা গেছে কোচিংগুলোর নীচে এবং অভ্যর্থনা রুমে সময় কাটাতে। সারাদেশ যেখানে সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ সেখানে কুষ্টিয়ার কোচিংগুলো কিভাবে কোচিং ক্লাস চালু রাখে? কোমলমতি শিক্ষার্থীরা করোনার ঝুঁকিতে পড়েছে। গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসকের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের করোনা বিষয়ে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করে কোচিং সেন্টারগুলোতে প্রতিদিনই ক্লাস হচ্ছে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানানো হলেও গতকাল পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোচিং বন্ধের ব্যাপারে কোনরকমের পদক্ষেপ গ্রহন চোখে পড়েনি।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply