নিজ সংবাদ ॥মামলা হলেও প্রধান শিক্ষককে পেটানো সেই কাউন্সিলর সোহেল রানা আশাকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। রাজনৈতিক নেতাদের তদ্ববির থাকায় কাউন্সিলরকে গ্রেফতারে পুলিশের অনিহা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম নিজেই বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিদ্যালয়ের জায়গা দখলে বাধা দেয়ায় কুষ্টিয়া শহরের লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পেটানো কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা আশাসহ তাঁর তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, শহরের মোল্লাতেঘরিয়া এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা আশা, একই এলাকার নিয়ামত আলীর ছেলে ও কাউন্সিলরের সহযোগী ফারুক, তোফাজ্জেলের ছেলে তাছের ও পলান মন্ডলের ছেলে আনছের আলী।
এরমধ্যে তিন নম্বর আসামি তাছেরকে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার দুপুরে আসামি তাছেরকে কুষ্টিয়ার সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেন মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম রফিক। আদালত আসামি তাছেরের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা আশা দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামের বিভিন্ন রাস্তা ড্রেন এবং বাথরুম নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী বিদ্যালয়ের মাঠে রেখে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাফেরা ও খেলাধুলায় বিঘœ সৃষ্টি করে আসছিল। এছাড়া স্কুলের পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারসহ স্কুলের সাথে খোয় ভাঙ্গা মেশিন রেখে প্রায় প্রতিদিনই স্কুল চলাকালীন সময়ে বিকট শব্দে খোয়া ভাঙ্গায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানও ব্যহত হচ্ছিল। এই বিষয়টাই জানিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে এসব নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার জন্য কাউন্সিলরকে অনুরোধ করে আসছি। বৃহষ্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের গেইটে খোয়া ভাঙ্গার মেশিন বন্ধ করতে বলায় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে কাউন্সিলর আশা তাঁর দলবল নিয়ে স্কুলের মধ্যে প্রবেশ করে উপর হামলা করে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে। এসময় আমার চিৎকারে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা এগিয়ে আসলে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। সরকারী দায়িত্ব পালনকালে নিজ অফিস কক্ষে আসামিরা বেআইনীভাবে প্রবেশ করে আপরাধমুলক বলপ্রয়োগ করতঃ স্বেচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করে আফিসের পঞ্চাশ হাজার টাকার আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম।
কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সাব্বিরুল আলম জানান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা আশাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। রাতেই অভিযান চালিয়ে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাঁকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুত সময়ের সময়ের মধ্যেই সকল আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন,‘ থানায় মামলা দিয়েছি। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে মুল আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি আসছে। রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের সাথে তার ভালো সম্পর্ক থাকায় মুল আসামী ধরা ছোঁয়ার বাইরে।