নিজ সংবাদ ॥ কাজের বিপরীতে জামানতের ভুয়া পে-অর্ডার জমা দিয়ে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতুর টোল আদায়ের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কাজের মেয়াদ শেষে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওই পে-অর্ডার ব্যাংকের সংশ্লি¬ষ্ট শাখায় ক্যাশ করতে গেলে এই জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও সড়ক জনপথ বিভাগ কেউই এ ঘটনার দায় নিতে চাইছে না। তারা একে অপরকে দোষারোপ করছে।
কুষ্টিয়া সওজ সূত্র জানা গেছে, ২০১৯ সালে কুষ্টিয়া কুমারখালীতে লাহিনীপাড়া এলাকায় গড়াই নদের ওপর সৈয়দ মাসউদ রুমি সেতু টোল আদায়ের দরপত্রে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ কার্যাদেশ পায়। দরপত্রের অনুযায়ী প্রতি বছর তিন মাস অন্তর অন্তর ৪ কিস্তিতে টোলের টাকা পরিশোধ করার কথা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের। এক্ষেত্রে দুই কিস্তির সমপরিমাণ অর্থ সড়ক ও জনপথ বিভাগ জামানত হিসাবে রাখা বাধ্যতামূলক। সে অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাউথইস্ট ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার প্রায় আড়াই কোটি টাকার দুটি পে-অর্ডার সড়ক ও জনপথ বিভাগের কুষ্টিয়া কার্যালয়ে জমা রাখে।
যেহেতু দুই কিস্তির টাকার সমপরিমাণ টাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের আগেই জামানত হিসাবে জমা রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সে কারণে কাজের মেয়াদ শেষে টোলের টাকার শেষ দুটি কিস্তির জমা দেয়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। গত সোমবার সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষ ওই পে-অর্ডার দুটো সাউথইস্ট ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখায় ভাঙ্গাতে গিয়ে জানতে পারে এগুলো জাল। এ ঘটনায় একে অপরকে দুষছে সংশ্লি¬ষ্টরা। কেউ দায় নিতে চাইছে না।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হালিমুজ্জামান বলেন, কাজের অর্ডার পাওয়ার পর জামানতের জন্য দুটিসহ মোট ছয়টি পে-অর্ডার সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমা দিয়েছিলাম। সড়ক ও জনপথের তৎকালীন কর্মকর্তারা ব্যাংকের সংশ্লি¬ষ্ট শাখায় গিয়ে সেটা যাচাই বাছাই করে নেন। পরে সড়ক জনপথ বিভাগ জামানতের দুটি পে-অর্ডার ছাড়া বাকি চারটি পে-অর্ডার ভাঙিয়ে ক্যাশ করেও নেয়। এখন তিন বছরের মাথায় এসে কি করে সেই পে অর্ডার জাল হয়ে গেল সেটা মাথায় ঢুকছে না।
কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম বলেন, সোমবার পে-অর্ডার দুটি ব্যাংকে ক্যাশ করতে গিয়ে জানা গেলে সেগুলো আসল নয়, জাল। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত মামলা করা হবে। পাশাপাশি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার দায় এড়াতে পারে না। সাউথইস্ট ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছি। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। যে সময়ের ঘটনা তখন জাকির হোসেন নামে একজন ব্যবস্থাপক দায়িত্বে ছিলেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply