নিজ সংবাদ ॥ পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে ফেরার পথে কুষ্টিয়া শহরের রাজারহাট মোড় এলাকায় কতিপয় সন্ত্রাসী কর্তৃক জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার কাগজ প্রতিবেদক নুর আলম দুলাল, ডেইলী সানের জেলা প্রতিনিধি রেজাউল করিম রেজা ও এস এ টিভির ক্যামেরাপার্সন হাবিবুর রহমান হাবিবের উপর হামলার ঘটনায় মামলাটি পুণঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কুষ্টিয়ার চিফজুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩’র বিচারক জুয়েল রানা। গতকাল সকালে আদালতে বাদী পক্ষের আইনজীবি পুলিশের প্রেরিত মামলার চুড়ান্ত রিপোর্ট সন্তোষজনক না হওয়ায় না রাজী করেন। আদালত মামলাটি বিবেচনায় নিয়ে পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নিদের্শ প্রদান করেছেন। জানা যায়, চলতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারী রাত অনুমান ৮টার দিকে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে শহরের রাজারহাট মোড় এলাকায় পুর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী-মাদক বিক্রেতা সুজন, মুক্তার হোসেন, রাজিব, বাগবাবু, দাদনসহ ১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল সাংবাদিক নুর আলম দুলাল, রেজাউল করিম রেজা ও হাবিবুর রহমান হাবিবের উপর চড়াও হয়ে লাঠি, হাসুয়াসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এলোপাথাড়ী আঘাত করতে থাকে। এ সময় সাংবাদিক রেজা, হাবিব রাস্তার উপর পড়ে গেলে হামলাকারীরা তার পরও হামলা চালাতে থাকে এ সময় সাংবাদিক নুর আলম দুলাল বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাকেও আঘাত করে। পরে স্থানীয় সাংবাদিক, পুলিশ, র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তিন সাংবাদিককে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকরা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২শ ৫০ শর্য্যার হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাংবাদিক রেজাউল করিম রেজার সোলডার বোন ভেঙ্গে গেছে বলে জানায়। এবং মাটিতে ফেলে উপর্যপুরি আঘাত করায় সাংবাদিক হাবিব পেটে, মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না দেয়া হলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা ছিল বলেও চিকিৎসক জানায়। এ ব্যপারে গত ২৩-২-২২ খ্রীঃ কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাংবাদিক নুর আলম দুলাল বাদী হয়ে হামলার সাথে জড়িত কুষ্টিয়া আড়–য়াপাড়া এলাকার রজব আলী খাঁন চৌধুরী সড়কের বাসিন্দা মুক্তার হোসেনের পুত্র সুজন, মৃত তাহাজেল হোসেনের পুত্র মুক্তার হোসেন, জামাল উদ্দিনের পুত্র রনি, মৃত আহসান আলীর পুত্র বাবু ওরফে বাগ বাবু, হোসেন শেঠ’র পুত্র দাদন ওরফে দাদু, লিটনের পুত্র বাবু, মিয়া জান ওরফে কামু মিয়ার পুত্র রাজিবসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের ভার পড়ে এস আই মনিরুজ্জামানের উপর। এ ব্যাপারে মামলার বাদী সাংবাদিক নুর আলম দুলাল জানান, যেখানে আমিসহ আমাদের তিনজনকে রাস্তার উপর ফেলে দিয়ে ধারালো অস্ত্র, লাঠি, বেজ লাঠি, হকি দিয়ে বেদম প্রহার করে সন্ত্রসীরা। একজন সহকর্মির কলার বোন ভেঙ্গে চিরদিনের মত পঙ্গুত্ব বরণ করেছে একজন জীবন-মৃত্ব্যর সন্ধিক্ষণ থেকে বেঁচে এসেছেন। মোবাইল, টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে, ক্যামেরা ভাঙ্গচুর করেছে। পর দিন এ ঘটনার পুর্ণ বিবরণ দিয়ে জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা, টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। তার পরও পুলিশ এ ঘটনার সাথে আসামীদের কোন সংশ্ল্ষ্টিতা খুঁজে পায়নি। মনগড়া একটা মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। যাতে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে পারে। এমন কল্পিত চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেখে আইনজীবিসহ জেলার সর্বস্তরের সাংবাদিকদের হতাশ করেছে। আজ সোমবার কুষ্টিয়ার চিফজুডিশিয়াল মাজিষ্ট্রেট আদালত-৩’র বিচার জুয়েল রানার আদালতে বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডঃ সাজ্জাদ হোসেন সেনা আদালতে না রাজি পিটিশন করেন এবং মামলাটি পুনরায় সঠিক ভাবে তদন্তের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান। আদালতের বিজ্ঞ বিচার মামলাটি বিবেচনায় নিয়ে বাদী পক্ষের না রাজী গ্রহন করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় আসামীরা উপস্থিত ছিল। এ ব্যাপারে মামলা পরিচালনাকারী এ্যাডঃ সাজ্জাদ হোসেন সেনা জানান, তিন জন প্রতিষ্টিত গণমাধ্যম কর্মি এমন নাজেহাল হলেন, যেখানে চিকিৎসকের স্পষ্ট ফ্যাকচার রিপোর্ট রয়েছে, রক্তমাখা কাপড় রয়েছে, এক্সরে রিপোর্ট রয়েছে সেখানে কিভাবে হাসপাতালের চিকিৎসক কোন আঘাতের ইনজুরির চিহ্ন খুঁজে পেলেন না। আর পুলিশ একজন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেনি আসামীরা বীরদর্পে আদালত থেকে দিনে দিনে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর পুলিশ নাকি আসামী খুঁজেই পাননি। এমন বানোয়াট গল্প রিতিমত আইনজীবি, সাংবাদিক সমাজকে হতাশ করেছে। তিনি বলেন, এ মামলাটি সঠিক ভাবে তদন্তপুর্বক রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হলে বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা রাখি।