বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ায় সরকারি বিধিনিষেধ অনেকটা অকার্যকর। দোকান পাট অফিস আদালত সবখানেই অকেটা শিথিল ভাব। রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে শপিংমল ও মার্কেট বন্ধের আদেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এমনকি দোকান মালিক সমিতির নেতারাই এ নির্দেশনা মানছে না। এ অবস্থায় সংক্রমন বাড়ছে। গত ৪ দিনে জেলায় শতাধিক করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ২ জন। সীমান্তবর্তি এ জেলায় সংক্রমন বাড়লেও প্রশাসন বিশেষ লকডাউন দেয়ার বিষয়ে ধিরে হাঁটছে। কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না তারা। এতে করোনা ঝুঁকির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জরুরীভাবে কড়া লকডাউন দেয়ার কথা বলছেন তারা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে লকডাউন বিষয়ে আজ মঙ্গলবার জেলা করোনা কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে। এ সভাতেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে কুষ্টিয়ার বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন দেয়া হবে কি-না।
সর্বশেষ গতকাল ৩১ মে জেলায় ৩১ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ১জন করোনা রোগী। এর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ মে জেলায় ৩৩ জনের করোনা সনাক্ত হয়। যা গত পৌন ২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সনাক্ত। এ দিন পরীক্ষা করা হয়েছে ২২০জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় সনাক্তের হার ১৫ শতাংশের সামান্য বেশি। ওদিনও ১জন করোনা রোগী মারা যায়। জেলায় গত (২০ মে থেকে ৩০মে) ১০ দিনে নতুন করে করোনা সনাক্ত হয়েছে ২২৩ জন। ৬৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা এ সংখ্যা মিলেছে। এদিকে গত শনিবার থেকে ভারত থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় কুষ্টিয়া ফিরেছেন ১৪৭ জন মানুষ। তার মধ্যে তিনজনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। তবে তা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট কি-না তা পরীক্ষার জন্য নমুন সংগ্রহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিসের একাধিক সুত্রে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য জেলায় পরীক্ষার তুলনায় সনাক্ত ৫০ শতাংশের কাছে। আর কুষ্টিয়ায় পরীক্ষায় বিবেচনায় সনাক্ত কম। তাই প্রশাসন ধিরে হাঁটছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে তারা কথা বলছে। প্রয়োজন হলে লকডাউন দেয়ার কথা বলছেন তারা।
জানাগেছে, সরকারি যে বিধি নিষেধ চলছে তার উপর নির্ভর করছে প্রশাসন। তবে সরকারি বিধি নিষেধ থাকলেও তা জেলায় মানা হচ্ছে না। এ অবস্থায় সংক্রমন আবার বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বেশির ভাগ মানুষ। তখন সামাল দেয়া কঠিন হতে পারে।
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন- কুষ্টিয়া জেলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সনাক্ত কম। ধিরে ধিরে কমছে। তবে সবাইকে নিয়ম মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। আমরা সব দিকে খেয়াল রাখছি। সীমান্তের বিয়ষয়টি মাথায় আছে। সেখানেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আর প্রয়োজন হলে বিশেষ এলাকায় লকডাউন দেয়া হতে পারে। সেটা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
জেলা প্রশাসক মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা মেনে তারা এখনো কাজ করছে। করোনা সংক্রমন যাতে না বাড়ে তারা সজাগ রয়েছেন। জেলায় পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত ২০ এর নিচে আছে। তবে মানুষ যাতে আইন মানে এ জন্য কঠোর অবস্থানে যাবে প্রশাসন। আর লকডাউন দেয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই জেলা কমিটির সুপারিশ মেনে তা কার্যকর করা হবে।’
সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, ঈদের আগে নমুনায় পরীক্ষায় আক্রান্তের হার ছিল ৯ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে। সেটি এখন ১৩ থেকে ১৬ শতাংশে ঠেকেছে। তবে আগের তুলনায় কমছে। গতকাল ৩১ মে পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় ৪ হাজার ৯৭৮ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে মারা গেছেন ১১২ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬৬০জন এবং আইসোলেশনে রয়েছেন ২০৬ জন।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply