নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার থানা বাজার এলাকার ওষুধের দোকান মা মেডিকেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান কামরুল প্রতিদিনের মত সোমবার দুপুরে বেচাকেনা করছিলেন। এ সময় একজন ক্রেতা গিয়ে তার হাতে প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে ওষুধগুলো দিতে বলেন। ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। প্রেসক্রিপশনে স্পষ্ট করে লেখা করোনা পজিটিভ রোগী। ফার্মেসি মালিক কামরুজ্জামান কামরুল কৌতূহলবশত ক্রেতাকে জিজ্ঞেস করেন রোগী কে? জবাবে, আগন্তুক বলেন তিনি নিজেই রোগী। একথা শুনে কামরুজ্জামান কামরুলের চক্ষু চড়কগাছ। ফার্মেসি মালিক তৎক্ষণাৎ ওই ক্রেতাকে বলেন, ‘আপনার বাড়িতে কোন লোক নেই, আপনিতো করোনা পজিটিভ। আপনি কেন ওষুধ নিতে এসেছেন দোকানে? আর আপনার মুখে মাস্ক নেই কেন? ” একথা শুনে বিক্রেতা উল্টো ফার্মেসি মালিকের সাথে তর্ক জুড়ে দেন। পরে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওষুধ না নিয়েই ফিরে যান। দৌলতপুর উপজেলায় এই ব্যক্তির মত অনেক করোনা পজিটিভ এবং শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন মানুষ বাজার ঘাটে যথেচ্ছভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এমন অভিযোগ জেলার সবকটি উপজেলার বাসিন্দাদের। এসব মানুষ আর দশজন মানুষের মত করে দোকানপাটে গিয়ে জিনিসপত্র কিনছেন। এখানে সেখানে ঘুরেও বেড়াচ্ছেন। এলাকার কে কখন করোনা পজিটিভ হচ্ছেন সে ব্যাপারে প্রতিবেশী বা স্থানীয়রা থাকছেন অন্ধকারে। কারণ উপজেলার অধিকাংশ করোনা পজিটিভ রোগী এবং যাদের শরীরে উপসর্গ আছে তারা আক্রান্তের বিষয়টি গোপন রাখছেন। আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে কাউকে কিছু জানানো হচ্ছে না। প্রতিদিন রাতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন জেলার করোনা সংক্রান্ত সর্বশেষ খবর নিজস্ব ফেসবুক পেজে আপলোড করে থাকে। সেখানে কোন উপজেলায় কতজন নতুন রোগী শনাক্ত হল, কতজন মারা গেল আর কতজন মানুষ সুস্থ হল এর বাইরে আর কোন তথ্য থাকে না। তবে গত বছর প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা প্রশাসন তাদের ফেসবুক পেজে শনাক্ত হওয়া রোগির পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রকাশ করতো। এখান থেকে তথ্য পেয়ে আক্রান্ত রোগীর বাড়ির আশেপাশের লোকজন তার উপর নজর রাখার সুযোগ পেত। কিন্তু বর্তমানে জেলা প্রশাসন এই কাজটি বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি অবিলম্বে আগের মত নতুন শনাক্ত রোগীদের পরিচয় প্রকাশের ব্যবস্থা করা হোক। এটা হলে রোগীর বাড়ির আশেপাশের লোক তার ওপর কড়া নজর রাখতে পারবে। যাতে সে রোগ গোপন করে বাড়ির বাইরে বের হতে না পারে, সাধারণ মানুষের সাথে মিশতে না পারা। এই পরিস্থিতিতে দৌলতপুরসহ জেলার ৬ উপজেলায় গত দুই সপ্তাহ ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলা সদর থেকে গ্রামে গ্রামে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply