নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এক শিশুকে ফেলে রেখে মা পালিয়ে গেছেন। নবজাতককে একই হাসপাতালের ক্যাঙারু (স্ক্যানু) ওয়ার্ডে ৫ নং বেডে রাখা হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ শিশুটিকে ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্সরা সেবা দিচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বুধবার সকাল সাতটার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক নারী যান। তিনি রেজিষ্ট্রারে রিমি (২৬), স্বামী/বাবার জায়গায় মোমিন ও কবুরহাট জগতি, কুষ্টিয়া ঠিকানা লেখেন। পেটে ব্যথার কথার জানালে দায়িত্বরত চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান বুঝতে পারেন তিনি অন্ত:স্বত্তা। গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য বলা হলে ওই নারী রাজি হন না। একপর্যাযয়ে তাঁকে সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পৌনে আটটার দিকে পেটের ব্যথা তীব্র হলে জরুরিভাবে গাইনী অস্ত্রোপচারকক্ষে নেওয়া হয়। সেখানে স্বাভাবিকভাবে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন ওই নারী। আধাঘন্টা পর নারীকে ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। সেখান থেকে কৌশলে ওই নারী পালিয়ে যান। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মাহফুজুর রহমানের ভাষ্যমতে, ওই নারী জরুরি বিভাগে আসার পর ঠিকমত তথ্য দেননি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে ঠিকানা ব্যবহার করেছে সেটা ছিল ফেক। ভুল ঠিকানা দিয়ে হাসপাতালে আসেন তিনি। শিশুটিকে বর্তমানে হাসপাতালের ক্যাঙারু ওয়ার্ডের ৫নং বেডে রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাঙারু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি বেশ সুস্থ। তাকে ওয়ার্ডের নার্সরা যতেœ রেখেছেন। দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স ফাতেমা নাজনীন বলেন,‘আমার নয় মাসের বাচ্চা আছে। বাড়ি থেকে একটি ফিডার নিয়ে এসেছি। নিজের সন্তানের মতো ওয়ার্ডে বাচ্চাকে সময়মত দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। সিনিয়র নার্স সরবী খাতুন বলেন, সকালে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন শিশুটিকে দেখতে আসেন। ছেলে শিশুটির নামও রেখেছেন তিনি। নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ আলী। শিশুটির ওজন ৩ কেজি। শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ। যেহেতু তার কোন অভিভাবক নেই তাই স্ক্যানু ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত শিশুটির মা আসেননি। হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুল হাসিব বলেন, দুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশুটির পোশাক থেকে যাবতীয় সবকিছু দেওয়া হবে। তার চিকিৎসায় কোন ক্রটি রাখা হচ্ছে না। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মুরাদ হোসেন বলেন, ‘শিশুটি এখন রাষ্ট্রের সম্পদ। থানায় সাধারণ ডায়েরির পর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডে নেওয়া হবে। নবজাতককে হাসপাতাল ছাড়পত্র দিলে তাঁকে খুলনা শিশু হোমে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, যদি কোন নিঃসন্তান দম্পতি শিশুটিকে নিতে চায় তবে শিশু কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করতে পারে। যাচাই বাছাই করে আদালতের মাধ্যমে একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পরিবার শিশুটিকে নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply