1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ১৮ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ

  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ১১ জুন, ২০২১

নিজ সংবাদ ॥ জেলায় করোনা সংক্রমণ হার ও সংখ্যা বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় করোনা রোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে। যা মোট শনাক্তের সিংহভাগ। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি হওয়ায় কঠোর বিধি নিষেধ সময়ের দাবি বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। কুষ্টিয়ায় গত ১৫দিন ধরে করোনা সনাক্ত ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। করোনা রোগী বাড়ায় হাসপাতালে শয্যা সংকট ও অক্সিজেনের অভাব দেখা দিচ্ছে। বিধি নিষেধ থাকলেও কেউ না মানায় তা কোন কাজে আসছিলো না। তাই নতুন করে কঠোরবিধি নিষেধ আরোপ করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছিলো।

গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরি সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার খাইরুল আলম, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পরিচালক ইদ্রিস আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ’র সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন, সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মৃণাল কান্তি দে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাঃ সিরাজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকা, বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স এসোসিয়েশন কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি হাজী ওমর ফারুক, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কর্মার্সের সহ-সভাপতি এস এম কাদেরী শাকিল, চেম্বার পরিচালক মুক্তারুজ্জামান চৌধুরী মুরাদ, জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বাবলু, জেলা অটো চাল কল মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জয়নাল আবেদীন সাধু, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেমসহ করোনা নিয়ন্ত্রন কমিটির সকল সদস্য, চেম্বারের সদস্য এবং  জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঘন্টাব্যাপী চলা জরুরি সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় করোনা উদ্বেগজনক পরিস্থিতির দিকে চলে গেছে। আর দেরি করা যাবে না। তাই আজ (শুক্রবার দিবাগত) রাত বারটা ১ মিনিট থেকে কঠোর বিধি নিষেধের আওতায় আনা হচ্ছে।’

একথা বলেই তিনি সভা শেষ করেন। এবং রাতে বিধি নিষেধগুলো মাইকে প্রচার এবং জেলা প্রশাসনের ফেসবুকে আপলোড করা হবে বলে জানান।

রাত আটটায় জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি কুষ্টিয়া জেলায় করোনা ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ (শুক্রবার দিবাগত) রাত বারটা ১ মিনিট থেকে আগামী ১৮ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া পৌরসভাধীন সব এলাকায় বিধি নিষেধ আরোপ করেন। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক অধিক সংক্রমণ এলাকা হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত  নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্ত  মোতাবেক সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, দোকান, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।

বিধি নিষেধ চলা অবস্থায় কুষ্টিয়া পৌরসভা এলাকায় সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সব ধরনের পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতিত (ঔষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী ক্রয়, চিকিৎসা  সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার,) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে।

শুধুমাত্র সরকারি জরুরি নির্মাণ কাজ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলমান থাকবে। এসংক্রান্ত পন্য পরিবহন বিধি নিষেধের আওতা বর্হিভূত থাকবে।

আইন শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন কৃষি উপকরণ, খাদ্যশষ্য, খাদ্য দ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, গণমাধ্যম, সরকারের রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত সকল দপ্তর, সংস্থা জরুরি পরিষেবার আওতাভুক্ত থাকবে। এবং তাদের কর্মচারী ও যানবাহন  এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বর্হিভূত থাকবে। আগের মতো শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। এর আগে সভায় ব্যবসায়ী নেতারাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা লকডাউন করার বিষয়ে মতামত দেন। তাদের দাবি, লকডাউন দেওয়া হলে সেটা কঠোরভাবে পালন করতে হবে। অকার্যকর লকডাউন দিয়ে কোন লাভ নেই। কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি এসএম কাদেরী শাকিল বলেন, ‘আগামী ৭ দিন কঠোর এবং কার্যকারী লকডাউন চাই।’ কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও চেম্বার সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘জীবন ও জীবিকা পাশাপাশি। তবে জীবন বাঁচাতে আগামী ৭ দিন লকডাউনে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।’  জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধ করতে হলে লকডাউন দেবার কোন বিকল্প নাই। বাঁচতে পারলে সব ব্যবসা হবে।’ পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, ‘যেকোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পুলিশ সব সময় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। শহরের সাতটি প্রবেশ মুখে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রনে পুলিশ আজ (শুক্রবার) থেকেই কাজ শুরু করেছে।’ এর আগে গত রবিবার জেলা প্রশাসন থেকে জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জেলায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল ।  সেটা ৬ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত জেলায় এ বিধিনিষেধ বহালের কথা বলা হয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com