ঢাকা অফিস ॥ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পর্কে সংযত হয়ে কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে ‘যাচ্ছেতাই কথা’ বলে কেউ পার পাবে না বলে হুশিয়ারি দেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যেসব কথা বলা হচ্ছে, এখন এগুলো শুধু অশালীন নয়, অমার্জিত এবং অগ্রহণযোগ্য। আমি আবারও বলছি, দয়া করে সংযত হোন, দয়া করে আপনাদের কথা একটু কমান। ফখরুল বলেন, যাচ্ছেতাই বলবেন আর আপনারা মনে করবেন, সবসময় পার পেয়ে যাবেন; তা হবে না। এভরি থিং ইজ বিং নোটেড অ্যান্ড দ্য পিপলস অব দিস কান্ট্রি উড বি গিভ এনারসার টু টাইমলি। সময় যখন আসবে, তারা তার জবাব দিয়ে দেবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাকে (খালেদা জিয়া) অন্তরীণ করে রাখা, তাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া এটাই সরকারের লক্ষ্য। তার দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, উনারা বলেছেন, অনুমতি দিতে পারছেন না। কেন পারছেন না জানিয়ে যে যুক্তি দিলেন, সেই যুক্তিগুলো একেবারেই অগ্রহযোগ্য যুক্তি, খোঁড়া যুক্তি। তারা বলেছেন- সাজাপ্রাপ্তদের বিদেশে পাঠানোর নজির নেই। এটা তারা ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালে আমাদের প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী আসম আবদুর রব জেলে ছিলেন। তখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব তাকে এই আইনে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য জার্মানি পাঠানো হয়েছিল। ফখরুল বলেন, সেই বলার মতো তো বদান্যতা আপনাদের নেই। সেই বড় হৃদয়ও নেই। শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের সেটা ছিল। উনিও তার অনেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে তিনি এ সমস্ত সুবিধা দিয়েছেন, ছেড়ে দিয়েছেন, মুক্তি দিয়েছেন এবং তাদেরকে হেল্প করেছেন। কিন্তু আপনাদের সেই বন্যতা নেই। থাকলে বেগম খালেদা জিয়াকে অনেকদিন আগে আপনারা ছেড়ে দিতেন, আপনারা রাজনীতি করতে দিতেন। তিনি বলেন, তাদের (সরকার) এই আচরণ ম্যাডামকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে না দেয়ার বিষয়টা, এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, অমানবিক এবং জনগণকে ভ্রান্ত ধারা দেয়া হচ্ছে, বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা তখনও জানিয়েছি, এখনও জানাচ্ছি। ফখরুল বলেন, আমরা কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদনটা করিনি। আবেদন করেছেন তার পরিবার। ইনস ভেরি লাইটলি অ্যান্ড জেন্যুইন। তারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, যারা আবেদনটা করেছেন। সেখানে সবার প্রত্যাশা ছিল এমনকি বিদেশিরা পর্যন্ত তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে সুযোগ দেয়া হবে বলে ভেবেছিলেন। সেটা সরকার দেয়নি। খালেদা জিয়া সম্পর্কে সরকারের কিছু মন্ত্রীর ‘বিদ্রুপাত্মক’ মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এইসব মন্ত্রী যারা ওইভাবে ক্ষমতায় না আসলে কোনোদিন আপনার এমপি হওয়ারও স্বপ্ন দেখতে পারতেন না। তারা আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে ধরণের উক্তি করছেন, তা থেকে বিরত থাকবেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের উক্তি করলে তার যথাযোগ্য জবাব এ দেশের জনগণ আপনাদেরকে দেবে। খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এ সময় ভাইরাল হওয়া রিপোর্টটিকে ভুয়া দাবি করেন তিনি।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply