1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মিরপুর উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা মিরপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরা খাতুনের বিদায় সংবর্ধনা খোকসায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ২৬ টি সরকারি ঘরের চাবি হস্তান্তর কুষ্টিয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দুই জনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান সিটি কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া সদরে নতুন করে স্বপ্নের ঘর পেল ৪২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার আলমডাঙ্গায় ১৭জন ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে  জমি ও ঘর হস্তান্তর ভেড়ামারায় খালে ডুবে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর মৃত্যু মিরপুরের নওপাড়া বাজারে শান্তি সমাবেশ কুষ্টিয়ায় কিশোর গ্যাং শব্দটি শুনতে চাই না : এমপি হানিফ

চাষিদের কাছে পাঙাশ ও তেলাপিয়ার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩
  • ১৩ মোট ভিউ

 

কৃষি প্রতিবেদক ॥ পাঙাশ ও তেলাপিয়া বর্তমানে দেশে মৎস্য চাষে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা ও এর উচ্চ বাজারমূল্যের জন্য খামারিরা বর্তমানে অধিক হারে এ দুইটি মাছ চাষ করছে। গরিব ও মধ্যবিত্তদের মাছ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে পাঙাশ ও তেলাপিয়া। প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণের দক্ষতা, সম্পূরক খাবারের প্রতি আগ্রহ, বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকা ও অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে চাষিদের কাছে পাঙাশ ও তেলাপিয়ার জনপ্রিয়তাও দিন দিন বাড়ছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে ও এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ ১২-৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় টিকে থাকে এবং ১৬-৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। বাংলাদেশের জলবায়ুতে একই পুকুরে কমপক্ষে দু’বার মনোসেক্স তেলাপিয়া ও পাঙাশ চাষ করা যায়। ভবিষ্যতে আমাদের চাষ পদ্ধতি ও উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছের বিশাল আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ স্থান করে নিতে পারবে। তাই দেশে পাঙাশ ও মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষের বেশ উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। আবহমানকাল থেকে পাঙাশ মাছ এ দেশের মানুষের জন্য রসনার উৎস হিসেবে পরিচিত। এই মাছটি প্রাকৃতিক মুক্ত জলাশয়ে বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীসহ উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। পুকুরে পাঙাশ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় আশির দশক থেকেই এর ওপর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পাঙাশ মাঝের জাতগুলোর মধ্যে দেশি পাঙাশ ও থাই পাঙাশ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। দেশি পাঙ্গাসের রুপালি রঙের পিঠের দিকে কালচে এবং পার্শ্ব রেখার ওপরে সামান্য ধূসর। এ মাছের দেহে কোনো আঁশ নেই। এখনো আমাদের দেশীয় প্রজাতির পাঙাশ সুস্বাদু এবং  বেশিমূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে এ মাছটি  বেশি পাওয়া যায়। এরা প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত  দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন নদীসহ প্রধান নদীগুলোতে এর পোনা পাওয়া যায়। এদের আদিবাস থাইল্যান্ডে, কম্পুচিয়া, ভিয়েতনাম এবং পাশ্ববর্তী অঞ্চলের দেশে। আমাদের  দেশে সর্বপ্রথম ১৯৯৩ সালে বিদেশি এ প্রজাতির মাছের সফল প্রজনন করানো সম্ভব হয়। বর্তমানে বাণিজ্যিক চাষাবাদের ক্ষেত্রে থাই পাঙাশ একটি জনপ্রিয় নাম। দেশি পাঙ্গাসের চেয়ে এ জাত দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ মাছটি সর্বোচ্চ ১০-১২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাছ চাষের পদ্ধতিটি নির্ভর করে পুকুর বা জলাশয়ের বৈশিষ্ট্য, পরিবেশেগত অবস্থা, পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, পুঁজি, মানসম্মত পোনা প্রাপ্তি, বাজার ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ের ওপরে। এসব বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় চাষ পদ্ধতিটি কেমন হবে। কম সময়ে বেশি উৎপাদনের উদ্দেশ্যে বেশি ঘনত্বে পোনা মজুত করা হয়। এক্ষেত্রে আমিষসমৃদ্ধ কৃত্রিম খাবার প্রয়োগের মাধ্যমে বেশি মুনাফা করা যায়। উন্নত চাষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হেক্টর প্রতি ১৫  থেকে ২০ টন পাঙাশ উৎপাদন করা সম্ভব। পাঙাশ চাষের পুকুর আয়তাকার হলে ভালো হয়। পুকুরের তলা ভালোভাবে সমতল করে নিতে হবে। পুকুরের পানির গভীরতা ১.৫ থেকে ২ মিটার পর্যন্ত রাখা দরকার। পাঙাশ চাষের জন্য দো-আঁশ মাটির পুকুর সবেচেয়ে ভালো। জরুরি প্রয়োজনে যাতে দ্রুত পানি দেয়া যায় সেজন্য পুকুরের কাছেই গভীর বা অগভীর নলকূপের ব্যবস্থা রাখা দরকার। বর্ষায় বা অতিরিক্ত বৃষ্টিতে যাতে করে পুকুর ভেঙ্গে না যায়  সেজন্য আগে থেকেই প্রয়োজনীয় মেরামত সেরে ফেলতে হয়। সর্বোপরি এমন জায়গায় পুকুরটি বেছে নিতে হবে যেখানে যোগাযোগের সুবিধা ভালো এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পাঙাশ চাষের পুকুরে অপ্রয়োজনীয় ও রাক্ষুসে মাছ যেমন- শোল, বোয়াল, গজার, টাকি, বাইম, মলা, ঢেলা ইত্যাদি মাছকে পাঙাশ চাষের আগেই অপসারণ করতে হবে।

পুকুরকে মাছ চাষের উপযুক্ত ও টেকসই করতে চুন প্রয়োগ খুব গুরুত্বপূর্ণ। যে সব পুকুরের পানিতে অ¤¬ত্বের সমস্যা নেই সেখানে প্রতি হেক্টরের জন্য ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি চুন প্রয়োগ করতে হয়। চুন প্রয়োগের আগে গুড়ো করে মিহি করে নিলে এর কার্যকারিতা অনেকগুণ বেড়ে যায়। পুকুরের প্রস্তুতি শেষ হলে উন্নত গুণাগুণ সম্পন্ন পাঙাশ মাছের পোনা সংগ্রহ করতে হয়। এ জন্য বিশ্বস্ত কোনো হ্যাচারি থেকে পোনা সংগ্রহ করা উচিত। মাছের খাদ্যের পরিমাণ মাছের বয়স এবং দেহের ওজনের ওপর নির্ভর করে। ১৫ দিন পর পর নমুনা হিসেবে কয়েকটি মাছের ওজন পরীক্ষা করে দেখতে হবে মাছ ঠিক মতো বাড়ছে কিনা। নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য পুকুরের আয়তন অনুযায়ী নির্ধারিত ৬ থেকে ৮টি স্থানে প্রদান করা ভালো। দানাদার জাতীয় খাবার ছিটিং এবং সম্পূরক খাবার বল আকারে নির্দিষ্ট জায়গায় সরবরাহ করতে হয়। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণে মাছের চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সারাদেশের প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর পুকুর, দীঘি ইত্যাদিসহ প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ হেক্টর জলাশয়ে পরিকল্পিতভাবে পাঙাশ মাছের চাষ করলে দেশের সামগ্রিক মৎস্য উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এ দেশের বিপুলসংখ্যক বেকার যুব ও যুব মহিলাদের। যখন মাছের গড় ওজন ৩০০-৫০০ গ্রাম হয় তখন বাজারের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে সব মাছ ধরে ফেলতে হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page