নিজ সংবাদ ॥ আগামীকাল ২৯শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক জি.এস অমিত সম্ভাবনাময় তরুণ ছাত্রনেতা প্রয়াত হাসান জামান লালনের ২৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে আগামীকাল বিভিন্ন সংগঠন তাঁর মৃত্যুতে ব্যাপক কর্মসূচীর আয়োজন করেছে। কুষ্টিয়া শহরের বিশিষ্ট সমাজসেবী ও কুষ্টিয়া পৌর এলাকার মিলপাড়া ওয়ার্ডের সাবেক সফল কমিশনার ও কুষ্টিয়া পৌরসভার সর্বপ্রথম জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রয়াত চেয়ারম্যান ম.আ. রহিম আর মাতা জাহানারা রহিমের চার ছেলে মেয়ের মধ্যে হাসান জামান লালন ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ এবং সকলের খুব প্রিয় ও ¯েœহের। এই শহরের বিশিষ্ট সমাজ সেবক প্রয়াত জেহের আলী মন্ডল সাহেবের নাতী হাসান জামান লালন খুব ছোট থেকেই ছিলেন একটু রাজনীতি সচেতন ও প্রগতিশীল। ১৯৭২ সালের ২৫ শে সেপ্টেম্বর এক আশি^নের শুভ দিনে পৈত্রিক নিবাস মীর মশাররফ হোসেন সড়কের “ছায়ানীড়”এ হাসান জামান লালনের জন্ম হয়। ১৯৮০ সালে শহরের মিশন স্কুলে লালন ১ম শ্রেণিতে ভর্তি হবার মধ্য দিয়ে তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। এরপর হাসান জামান লালন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৯০ সালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এস.এস.সি পাশ করেন, ১৯৯২ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন এবং ১৯৯২-৯৩ শিক্ষাবর্ষে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞান সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন। অবশ্য ১৯৯০ সাল থেকেই তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হন। এই সুবাদে ১৯৯১ সালে তিনি সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত হন। রাজনৈতিক মেধা ও মননশীলতার জন্য হাসান জামান লালন ১৯৯২ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। পারিবারিক পরিচয়ে হাসান জামান লালন এই শহরের প্রখ্যাত সমাজ সেবক ও সজ্জন ব্যক্তিত্ব জনাব জেহের আলী মন্ডলের পৌত্র। মন্ডল পরিবার কুষ্টিয়া শহরের একটি প্রগতিশীল পরিবার হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। হাসান জামান লালনের প্রয়াত পিতা ম.আ. রহিম ছিলেন অতিশয় সজ্জন অমায়িক ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় এক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। যিনি ছিলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান। হাসান জামান লালনের চাচা ছিলেন কুষ্টিয়ার বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক প্রয়াত ম.মনিরুজ্জামান। হাসান জামান লালনের বড় ভাই মোঃ আখতারুজ্জামান একজন ব্যবসায়ী, সভাপতি কুষ্টিয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপ ও মন্ডল ফিলিং স্টেশন এর মালিক। দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সাবেক পরিচালক রাকিবুজ্জামান সেতুর চাচা। হাসান জামান লালনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা একটি সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের মধ্যে। প্রগতিশীল ও সংস্কৃতিবান মন্ডল পরিবারকে ঘিরেই পরিচালিত হয়েছে আড়–য়াপাড়া তরুন সংঘ পাঠাগার ও মিতালী পরিষদের মত সাংস্কৃতিক সংগঠন। এই পরিষদের মধ্যে হাটি হাটি পা পা করে বেড়ে ওঠা লালন মিশন স্কুল ও জিলা স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে ১৯৯০ সালে প্রবেশ করেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। তরুণ লালন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের বৃহৎ পরিমন্ডলে ছাত্র-ছাত্রী, ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষকদের সাহচর্যে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে পরিণত হন এক প্রতিশ্রুতিশীল এবং সম্ভাবনাময় তরুণ নেতৃত্বে। কেবলমাত্র ছাত্রলীগের কলেজ কমিটিতেই নয় জেলা ছাত্রলীগের এক সম্ভাব্য নেতৃত্বে পরিণত হন হাসান জামান লালন। আমাদের দূর্ভাগ্য ১৯৯৬ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর এই সম্ভাবনাময় তরুণের জীবন অবসান ঘটে। ভারতের দার্জিলিংয়ে ভ্রমণ করতে গিয়ে টাইগার হিলে এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। দীর্ঘ ২৬ টি বছর অতিক্রান্ত হলেও তরুণ এ ছাত্রনেতার স্মৃতি কেবল তার পরিবারের মধ্যে নয় আমাদের মধ্যেও সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। তাঁর মৃত্যু দিবসে আত্মার শান্তি কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে যেমন দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে তেমনি সর্ব সাধারণের পক্ষ থেকে তার স্মৃতি চারণ ও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় তার স্মরণে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাদ আছর আড়–য়াপাড়া ছাখাবী জামে মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত থেকে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনার জন্য পৌরবাসী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি তার পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।