ক্রীড়া প্রতিবেদক ॥ এক বছরের বেশি সময় পর মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচি ও আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বিবেচনায় পাল্টে গেছে সংস্করণ। পাল্টায়নি স্পন্সর। টানা নবমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগে স্পন্সর ওয়ালটন। জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনে এবারের প্রিমিয়ার লিগের নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ ২০১৯-২০ স্পন্সর্ড বাই ওয়ালটন।’ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার স্পন্সর হিসেবে ওয়ালটনের নাম ঘোষণা করে বিসিবি। সংবাদ সম্মেলনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে ছিল করোনাভাইরাস প্রসঙ্গ। প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) প্রধান কাজী ইনাম আহমেদ জানান, সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যতটা সম্ভব নিখুঁত জৈব সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার চেষ্টা হয়েছে। “১২ দলে খেলোয়াড় আছে ১৭ জন করে খেলোয়াড়। এই টুর্নামেন্টে আমাদের সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় যুক্ত। এখান থেকে ওরা যে টাকাটা পায়, সেটাই ওদের মূল আয়। ওদের দিকে তাকিয়েই এই টুর্নামেন্ট করছি। জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা ছিল। সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের অনেক কাজ করতে হচ্ছে।” “দলগুলোর জন্য শীর্ষ পর্যায়ের চারটি হোটেল রাখা হয়েছে।ৃ অতীতের সব আয়োজন থেকে পাওয়া শিক্ষায় বিসিবি আমাদের অনেক সহায়তা দিতে পেরেছে, কি করে আমরা সবচেয়ে ভালো পরিবেশটা তৈরি করতে পারি। প্রতিটি দল আলাদা বাস ব্যবহার করছে। বাসের চালক পর্যন্ত আলাদা রাখার ব্যবস্থা আছে। আম্পায়ারসহ ম্যাচ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সুরক্ষা বলয়ে রাখা হচ্ছে। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার জন্য যারা এসেছে তারা সবাইকে দুটি করে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে।” কদিন পরপরই জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকতে হচ্ছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। তাদের জন্য যেন ব্যাপারটা সহনীয় রাখতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানালেন সিসিডিএম প্রধান। “জাতীয় দলের কয়েকজন খেলোয়াড়কে, যদি তারা চায় সিঙ্গেল রুম দেওয়া হচ্ছে। স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে উঠতে পারে। তাদেরও দুটি পরীক্ষা করিয়ে আসতে হবে। এর ব্যবস্থাও আমরা করেছি। যেহেতু আগামী কাল থেকে খেলা শুরু হচ্ছে, আমি নিশ্চিত জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা সবাই আজকের মধ্যে জৈব সুরক্ষা বলয়ে চলে আসবে।” বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, প্রটোকল ভঙ্গ হচ্ছে কি না এই ব্যাপারে নজর রাখবেন তারা। “প্রটোকল ভাঙলে কি হবে সেটা আমাদের প্রটোকলে বলা আছে। প্রতিটা হোটেলে কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা খেয়াল রাখবেন এবং যদি কোনো নিয়ম ভঙের ঘটনা ঘটে আমাদের টেকনিক্যাল কমিটিও থাকবে। সেই কমিটি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রতিটি দল জৈব সুরক্ষা বলয়ে রাখতে পারবে সর্বোচ্চ ১৭ জন খেলোয়াড়। কাজী ইনাম জানান, এর বাইরেও অপেক্ষমাণ হিসেবে কয়েকজন খেলোয়াড়কে রাখতে পারবে দলগুলো। “কোনো খেলোয়াড় চোট পেলে বা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে সেখান থেকে দলে নিতে পারবে। তখন পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ ফল এলে তারা জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকতে পারবে।” গত ২৬ ও ২৮ তারিখ দুটি করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়েছে ক্রিকেটারসহ সংশ্লিষ্টদের। সামনেও পরীক্ষা করানো হবে বলে জানালেন কাজী ইনাম। “আমরা সব সময় দেখব, জৈব সুরক্ষা বলয়ে কারো মধ্যে কোনো উপসর্গ আছে কি না। প্রতি দিন আমরা চেক করে দেখব, সবাই ঠিক আছে কি না। আমরা নিয়মিত তাপমাত্র পরীক্ষা করব। কেউ যদি জানায় তার কোনো ধরনের উপসর্গ আছে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা তার কন্টাক্ট ট্রেস করব এবং পরীক্ষার আগেই তাকে আইসোলেট করা হবে। এরপর পরীক্ষার ফল দেখে পরবর্তী করণীয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” গত বছর এক রাউন্ড হয়ে স্থগিত হয়ে যাওয়া টুর্নামেন্টেরই ধারাবাহিকতা এটি, ২০১৯-২০ মৌসুমের লিগ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে গত বছরের মার্চে ৫০ ওভারের সংস্করণে শুরু হওয়া লিগের ওই এক রাউন্ড বাতিল হয়ে যাবে পুরোপুরি। তার জায়গায় এবার হবে ২০ ওভারের ম্যাচ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, বিকেএসপির ৩ ও ৪ নম্বর মাঠ- এই তিন ভেন্যুতে দিনে হবে ছয়টি ম্যাচ। প্রথম দুটি ম্যাচ শুরু হবে সকাল ৯টায়। বিসিবির ইউটিউব চ্যানেলে সব ম্যাচ লাইভ স্ট্রিমিংয়ের কথা জানান কাজী ইনাম।