ঢাকা অফিস ॥ টিকিট ছাড়া কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল সোমবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করতে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন। নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বিধিনিষেধের সময় বৃদ্ধি করা হলেও, সরকারের সব বিধিনিষেধ মেনে গতকাল সোমবার থেকে ২৮ জোড়া ট্রেন চলছে। করোনা সংক্রমণ রোধে টিকেট ছাড়া কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবে না। সে সঙ্গে অনলাইনে অর্ধেকের বেশি টিকেট বিক্রি হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে তিনি বলেন, সকল স্টেশনে নির্দেশনা দেওয়া আছে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে। এ ছাড়া এখন যাত্রী কম। যাত্রী বাড়লে, পরে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে, ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল সোমবার ভোর থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সরকার ঘোষিত অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার বলেন, গতকাল সোমবার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে প্রথমেই ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। এর আগে লোকাল ট্রেন বলাকা এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে বলাকা, পারাবত, মহানগর প্রভাতী, কর্ণফুলী ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস। দীর্ঘদিন পর ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। এ ছাড়া এক সিট ফাঁকা রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারের নির্দেশনা মানছেন রেলপথের যাত্রী ও কর্মকর্তারা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় স্টেশনে রেল লাইন ঠিক আছে কি না, তাও তদারকি করতে দেখা যায়। এছাড়াও ট্রেনগুলো জীবাণুমুক্ত করে ছাড়তে দেখা গেছে। যাত্রীদের হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও মাস্ক পড়া নিশ্চিত করে ট্রেনে উঠতে দেওয়া হয়। এর আগে গত রোববার রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, গতকাল সোমবার ২৮ জোড়া আন্তঃনগর ও নয় জোড়া এক্সপ্রেস-কমিউটার ট্রেন দিয়ে শুরু হবে ট্রেন চলাচল। এক আসন ফাঁকা রেখে বিক্রি হবে টিকেট। ৫০ শতাংশ টিকেট বিক্রি হবে। কাউন্টারে কোনো টিকিট বিক্রি হবে না, সব টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে। যেসব আন্তঃনগর ট্রেন চলছে- সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি/তূর্ণা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী/ তূর্ণা এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, জয়স্তিকা/উপবন এক্সপ্রেস, মেঘনা এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা/উদয়ন এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস, তিতুমির এক্সপ্রেস, সাগরদাড়ী এক্সপ্রেস, চালারচর এক্সপ্রেস এবং টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস। যেসব মেইল এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেন চলছে- কর্ণফুলী কমিউটার, সাগরিকা কমিউটার, বলাকা কমিউটার, জামালপুর কমিউটার, ঢাকা কমিউটার, রকেট মেইল, মহানন্দা এক্সপ্রেস, পদ্মরাগ কমিউটার এবং উত্তরা এক্সপ্রেস। গত রোববার যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- প্রতিটি ট্রেনের টিকেট অনলাইনে বিক্রয় করা হবে; আসনবিহীন কোনো টিকেট থাকবে না, তাই অযথা কাউন্টারে ভিড় করা থেকে বিরত থাকা। ট্রেন ভ্রমণে ইচ্ছুক যাত্রীদের নিজ নিজ টিকেট নিশ্চিত করেই কেবল ট্রেনে ভ্রমণের জন্য অনুরোধ করা হয়, টিকেটবিহীন কোনো যাত্রী স্টেশনে ঢুকতে বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া রেল ভ্রমণ না করা এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা। মাস্ক ছড়া কোনো যাত্রীতে স্টেশনে প্রবেশ বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে দেওয়া হবে না। এর আগে ৫ এপ্রিল থেকে যাত্রীবাহী সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। এরইমধ্যে ৭ এপ্রিল থেকে কৃষিজাত পণ্য ও পার্শ্বেল পরিবহনে চার জোড়া নতুন ট্রেন পরিচালনা করা হয়।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply