নিজ সংবাদ ॥ বিগত কয়েক দশক ধরে কুষ্টিয়াসহ সারা বাংলাদেশে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে কুষ্টিয়ার রশিদ গ্র“প। নিজেদের ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি অত্র এলাকার কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে রশিদ গ্র“পের কর্ণধর হাজ্বী আব্দুর রশিদ। রশিদ গ্র“পের অন্যতম প্রতিষ্ঠান রশিদ এগ্রো চাউল উৎপাদনে দেশের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও রশিদ গ্র“পের আরো যে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে রশিদ অটোমেটিক রাইচ মিল, রশিদ ওয়েল মিলস (যা ব্রোন ওয়েল উৎপাদন করে থাকে), রশিদ পেপার মিলস, রশিদ অটো মোবাইলস, রশিদ ট্রেডিং, রশিদ বিল্ডার্স এবং আলেয়া জুট মিলস উল্লেখযোগ্য। এদিকে ব্র্যাক ব্যাংকে একটি জমি নিলামে ক্রয় করাকে কেন্দ্র করে রশিদ গ্র“পের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রশিদ গ্র“পের চেয়ারম্যান হাজ¦ী আব্দুর রশিদ। তিনি জানান, আমরা বাংলাদেশের প্রচলিত সকল আইন কানুন মেনে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডে’র নিকট থেকে নিলামে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা বাজারের চাউল ব্যবসায়ী মোঃ শফিকুল ইসলামের ভি আই পি রাইচ মিল ক্রয় করি । তিনি আরো জানান, নিলামে জমি, যন্ত্রাংশ এবং অনান্য স্থাপনাসহ সর্বোচ্চ ১৮ কোটি টাকা মূল্য উঠে। আর সেই মূল্য আমরা দেই। যা ব্র্যাক ব্যাংক লিঃ কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠির মাধ্যমে জানায় এবং আমাদের কাছে বিক্রি করার কথা জানান। পরবর্তিতে আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল্য পরিশোধ করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নিতে বলে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুরু থেকে ভি আই পি রাইচ মিল কর্তৃপক্ষ সুনামের সহিত ব্যবস্থা পরিচালনা করলেও গত তিন-চার বছর যাবত তারা ব্যাংক এর দেনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ ছিলো। যার ফলে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভি আই পি রাইচ মিলের মালিক পক্ষকে একাধিকবার নোটিশ পাঠিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হাওয়ার কারনেই বন্ধককৃত সম্পত্তি নিলাম হয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৪ শে মার্চ ২০২২ তারিখে ভি আই পি রাইচ মিলের বন্ধকীকৃত সমস্ত সম্পত্তি নিলামে তোলে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। স্থাপনা ও যন্ত্রাংশ সহ নিলামে সর্বোচ্চ ১৮ কোটি টাকা দামে খরিদ করে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা বাজারের রশিদ গ্র“পের মালিক আব্দুর রশিদ। ব্যাংকের সমস্ত শর্ত পূরণ করায় এবং টাকা পরিশোধ করার ফলে ২৫শে জুলাই ২০২২ ইং ও ২৭শে জুলাই ২০২২ ইং তারিখে ৭৭৮৭/২২ এবং ৪৭৫৯/২২ নং দলিলে উক্ত সম্পত্তি ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়। এদিকে সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের বিষয়টি জানতে পেরে ভি আই পি রাইচ মিলের পক্ষ হতে গত ২রা আগস্ট আইনজীবি ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চেীধুরীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতে একটি রিট দয়ের করেন। যা ভূল তথ্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রশিদ গ্র“পের কর্ণধর আব্দুর রশিদ। তিনি জানান, উচ্চাদালতে রিট করার সময় কোথাও উল্লেখ করা হয় নাই যে এই জমি ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের তথ্য আইনের পরিপন্থী। এই বিষয়ে ভি আই পি রাইচ মিলের কর্ণধর মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সম্পত্তি নিলামের বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়নি। তাছাড়ও নিলামের বিষয়ে এলাকায় কোন মাইকিং করা হয় নাই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাবো। এই বিষয়ে রশিদ গ্র“পের চেয়ারম্যান হাজ¦ী আব্দুর রশিদ সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা সমস্ত নিয়মকানুন মেনেই নিলামে অংশগ্রহন করেছি এবং সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিয়েছিলো। সময় মত নিলামের সমুদয় টাকা পরিশোধ করার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিলামকৃত জমি আমাদের রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, আমরা সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট থেকে বুঝে নেওয়ার পরে ঐ প্রতিষ্ঠানে অমাদের প্রায় ৫ কোটি টাকার ধান এবং চাউল আছে। এছাড়াও আমি প্রায় ৫০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে মেরামত করেছি। আমি চাই আমার কোন কিছুর যেন ক্ষতিসাধন না হয়। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করবো। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্র্যাক ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকের পক্ষ থেকে সমস্ত নিয়মকানুন মেনেই এই নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ভি আই পি রাইচ মিল কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানালেও তারা ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেন নাই। এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন ব্যাংকের লোনের কিস্তি দেন নাই। যার ফলে খেলাপি হয়েছেন। তাই তার সম্পত্তি নিলাম করা হয়েছে। এদিকে সম্পত্তি নিলাম হাওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় যে কোন সময়ে বড়ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। তাই আইন শৃঙ্খলারক্ষকারী বহিনীর হস্তক্ষেপ কমনা করেছেন এলাকার সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা। এছাড়াও মিথ্যা তথ্য দিয়ে রশিদ গ্র“পের বিরুদ্ধে রিট করায় এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।