ঢাকা অফিস ॥ ভারতে আতঙ্ক ছড়ানো ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ (কালো ছত্রাক) শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশের এক ব্যক্তির শরীরে, যিনি বেশ কিছুদিন আগে কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠেছেন। ঢাকার বারডেম হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক এম কে আই কাইয়ুম চৌধুরী মঙ্গলবার সকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ মাসে তাদের হাসপাতালে পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়। আমাদের ল্যাবে পরীক্ষায় ওই রোগীর শরীরে মিউকরমাইকোসিস পাওয়া গেছে। ওই রোগী সাতক্ষীরা থেকে এসেছিলেন। বেশ আগে খুলনায় তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। আক্রান্ত ব্যক্তিকে বারডেমে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে সুস্থ হয়ে ওঠা কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে এ ‘কালো ছত্রাকের’ সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। বিরল এ সংক্রমণে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের মতো। অনেক সময় আক্রান্তের প্রাণরক্ষায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চোখ বা চোয়ালের হাড় অপসারণ করতে হয়। গত কয়েক মাসে দেশটিতে প্রায় নয় হাজারের মতো মানুষের দেহে প্রাণঘাতী ‘কালো ছত্রাক’ বা মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাদের একটি বড় অংশের দেহে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে কোভিড থেকে সেরে ওঠার ১২ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে। সাতক্ষীরার ওই ব্যক্তির ভারত ভ্রমণের ইতিহাস আছে কিনা জানতে চাইলে অধ্যাপক কাইয়ুম বলেন, ‘এখনও বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।’
মিউকরমাইকোসিস কি?
মিউকরমাইকোসিস একটি বিরল সংক্রমণ। মিউকর মোল্ডের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ ঘটে। মাটি, গাছপালা, বিষ্ঠা, এবং পচা ফল ও সবজি থেকে কেউ মিউকর মোল্ডের সংস্পর্শে আসতে পারেন। মাটি ও বাতাস এবং এমনকি সুস্থ মানুষের নাকে বা কফেও এটা পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে এর সংক্রমণ ঘটেছে, তাদের মাথা ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে রক্তা পড়া, মুখের একপাশ ফুলে যওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া বা চোখে ব্যথা করা, চোখের পাপড়ি ঝরে পড়া, ঝাপসা দেখা এবং এক সময় দৃষ্টি হারানোর মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে নাকের পাশপাশে চামড়ায় কালচে দাগ দেখা দিতে পারে। এ ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে আক্রমণ করে। ডায়াবেটিস, এইডস বা ক্যান্সারে যারা আক্রান্ত, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দারুণভাবে দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে এ সংক্রমণ প্রাণঘাতি হয়ে উঠতে পারে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply