1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩, ০৭:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নিরাপদ উপায়ে পানের বালাই দমন মাশউক এর উদ্দ্যোগে কুমারখালী উপজেলার প্রকল্প এলাকায় বিনামুল্যে “সনোফিল্টার” বিতরণ কুষ্টিয়ায় যায়যায়দিনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত দৌলতপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত ভেড়ামারায় ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু দৌলতপুরে ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধ ইটভাটায় সরবরাহের অপরাধে একজনের ৩ মাসের কারাদন্ড কুষ্টিয়ায় চালকলের দূষিত বর্জ্যে হুমকিতে পরিবেশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর বটতৈল ইউপি আ.লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক’র দাফন সম্পন্ন জিয়া ও আক্তারের তান্ডবে অশান্ত কুষ্টিয়ার হরিপুর দৌলতপুরে ফেনসিডিলসহ আটক-৩

দৈনিক শনাক্তে এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১
  • ৭৬ মোট ভিউ

 

ঢাকা অফস ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দৈনিক শনাক্তের হার বিবেচনায় এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর প্রতি ১০০ জনের ৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। অথচ এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুর সময় হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার ছিল ৫ শতাংশ। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সূচক ১ এর বেশি হওয়ায় এবং দৈনিক শনাক্তের হার ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় আগামী দিনগুলোতে শনাক্ত এবং মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশনের (সিআরআইডিএ) বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তারা বলছে, সংক্রমণের এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর। তবে অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মঙ্গলবার সিআরআইডিএ-র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শাহরিয়ার রোজেন তাদের বিশ্লেষণ ও প্রাপ্ত ফলাফল বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। সিআরআইডিএ জানায়, করোনা সংক্রমণের দৈনিক শনাক্তের হার বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ এবং এশিয়াতে প্রথম। গত ৭ জুলাই বিশ্বের মধ্যে নামিবিয়া, মেক্সিকো এবং তিউনিশিয়ার পরেই ছিল বাংলাদেশের অবস্থান। গত ১৫ দিনে বাংলাদেশে দৈনিক শনাক্তের হার বেড়েছে প্রায় ২ গুণেরও বেশি। গত ২৬ জুন দেশে দৈনিক শনাক্তের হার ছিল ১৫.৭ শতাংশ, ১২ জুলাই সেটি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২৪ শতাংশে, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ১৩ জুন থেকে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সূচক (রিপ্রোডাকশন রেট) এদেশে ১.৩ এর বেশি- অর্থাৎ গত এক মাস ধরে সংক্রমণ প্রতি ১০০০ জন থেকে ১৩০০ জনে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ টেস্ট না করার কারণে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিয়ে সংক্রমণের প্রকৃত চিত্রটি বোঝা যায় না। যেসব দেশে টেস্ট কম হয় সেসব দেশের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি বোঝার জন্য উপযুক্ত সূচক হলো ‘শনাক্তের হার’ এবং ‘রিপ্রোডাকশন রেট’। রিপ্রোডাকশন রেট (সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সূচক) ১-এর বেশি হওয়ায় এবং দৈনিক শনাক্তের হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে আমরা এখনো সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছাইনি। অর্থাৎ আগামী দিনগুলোতে শনাক্ত এবং মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। এদিকে, নিকট ভবিষ্যতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভবনাও কম। এ মুহূর্তে তাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর। গত ২৩ জুন ও ৪ জুলাইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সারা দেশেই আইসিইউ শয্যায় ভর্তি করা রোগীর সংখ্যা ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আরও বেড়ে গিয়ে ১১ জুলাই ৭৬ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। অর্থাৎ নতুন আক্রান্ত রোগীদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যাকেই মারাত্মক কোভিডজনিত জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। একইভাবে সাধারণ শয্যাগুলোতেও ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে গত তিন সপ্তাহ ধরে। ১১ জুলাইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে সিআরআইডিএ জানায়, অতি উচ্চ সংক্রমণের কারণে দেশে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছে এবং সারা দেশে ১১ হাজারেরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গত এপ্রিলে সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় দিনে সক্রিয় করোনা রোগী ছিল প্রায় ১ লাখ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতার হার বেড়েছে। ২০২১ সালের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সিআরআইডিএ জানায়, বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর প্রতি ১০০ জনের ৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে, অথচ এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার ছিল ৫ শতাংশ। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম টানতে না পারলে আগামী দুই সপ্তাহ পর সব রোগীকে হাসপাতাল বা আইসিইউ সেবা না দিতে পারার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। পাশাপাশি আগামী ঈদে মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জনসমাগম ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের গতিতে নতুন মাত্রা সংযোজন করতে পারে। ভারতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল সবাইকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না হওয়া। দেশের হাসপাতালে/আইসিইউতে সেবা দিতে হবে এমন রোগীর সংখ্যা হাসপাতালগুলোর সামর্থের বাইরে চলে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে। এ প্রসঙ্গে ডা. শাহরিয়ার রোজেন বলেন, লকডাউন একটি স্বল্পমেয়াদি সমাধান। আর মহামারি নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী সমাধান হলো টিকা। পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে টিকা ও ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে প্রতিযোগিতায় টিকা জয়ী হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা মহামারীর ভয়াবহ সংক্রমণের মূল কারণ হচ্ছে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্ট (অধিক সংক্রমণশীল) থেকেও কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রামক এবং হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। তবে কিছুটা স্বস্তির বিষয় হলো, অধিকাংশ ভ্যাকসিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে কার্যকর। ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ ভ্যাকসিন গুরুতর অসুস্থতা বা করোনাজনিত মৃত্যু থেকে প্রায় শতভাগ সুরক্ষা দেয়। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের পর হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধে ৯২ শতাংশ কার্যকর। অপরদিকে, ফাইজারের ভ্যাকসিনের দুই ডোজ গুরুতর অসুস্থতা থেকে ৯৬ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। মডার্না, সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন সম্পর্কে গবেষণার ফলাফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, মডার্না, সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন করোনাজনিত গুরুতর অসুস্থতা থেকে প্রতিরক্ষা দেবে। শাহরিয়ার রোজেন আরও বলেন, বাংলাদেশে খুব অল্প মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় আসায় (৪ শতাংশের কম) অধিকাংশ মানুষ প্রচ- ঝুঁকির মধ্যে আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন আর কেবল সরকারের পক্ষ থেকে লকডাউন বা শাটডাউন দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, এ ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতৃত্ব এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণ জরুরি। বাংলাদেশের শতকরা ৯৬ ভাগ জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিনের আওতার বাইরে থাকায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। সিআরআইডিএ-র পক্ষে এই বিশ্লেষণ ও লেখচিত্র প্রস্তুত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির এপিডেমিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কেএম তৌহিদুর রহমান, ডা. শাহরিয়ার রোজেন, ডা. নাজিফ মাহবুব, ডা. নওরিন আহমেদ ও ডা. মামুনুর রহমান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page