দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কঠোর বিধি নিষেধ বা লকডাউন করোনা বিস্তারকে কোনভাবেই রোধ করতে পারছেনা। মানুষের সচেতনতার অভাবে এর বিস্তার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা বা করোনা উপসর্গ নিয়ে চলাফেরা করা ব্যক্তিদের অবাধে খোলামেলা চলাফেরা বা মেলা মেশার কারনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অভিমত। দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌহিদুল হাসান তুহিনের মতে করোন সনাক্ত রোগীদের মধ্যে যাদের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ নেই, তাদের পরামর্শ পত্র দিয়ে হোম আইসোলেশন বা গৃহবন্দী থাকতে বলা হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে রোগীরা কোভিড পজিটিভ জেনেও স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এমনকি চিকিৎসকদের কাছে সরাসরি গিয়ে কোভিড গোপন রেখে অন্যান্য চিকিৎসা চেয়ে বসছেন। এধরণের ঘটনা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। কোভিড আক্রান্ত জানার পর রোগী এবং তার পরিবারের উচিত সরাসরি বাড়িতে গিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা, এটা তাদের দায়িত্ব। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি নেয়ার মতো শারীরিক অবস্থা দেখলে আমরা সেসমস্ত রোগীকে ভর্তি রাখছি। এভাবেই গণমাধ্যম কে এসব তথ্য জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরো জানান, গত সোমবার (২৮ জুন) পর্যন্ত গুরুতর উপসর্গ নিয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন ১২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। এরকমই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন দৌলতপুর থানা বাজার এলাকার মা মেডিকেল স্টোরের স্বত্বাধিকার কামরুজ্জামান কামরুল। তিনি জানান প্রতিদিনই দু’একজন রোগী আসেন ফার্মেসিতে। প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে দেখি করোনা পজিটিভ, তখন বুঝিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিই। প্রেসক্রিপশন দেখার আগ পর্যন্ত আমাদের বোঝার উপায় থাকেনা ক্রেতা কোভিড পজিটিভ না-কি নেগেটিভ।
দৌলতপুর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী সহ স্থানীয়রা জানান, দৌলতপুর উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে এবং বাইরে করোনা আক্রান্ত রোগীদের অবাধ চলাফেরা, যা সংক্রমণের হার সহজেই বাড়িয়ে দিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাইরে এসে অন্যান্য স্বাভাবিক সুস্থ্য সাধারণ মানুষদের মতো চলাফেরা করে। চা খায়, ওষুধ কিনে, ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন ব্যবহার করে। যা সবার জন্য আতঙ্কের।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে প্রায় ৮ লাখ মানুষের উপজেলা দৌলতপুর থানা সদরের এই বাজার হয়ে উঠতে পারে করোনা সংক্রমনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, ব্যাংক, থানা, কাঁচাবাজার থাকার কারণে বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউনেও চলাফেরা রয়েছে উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের মানুষের। পরিস্থিতি সামলাতে শিগগিরই সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সচেতন মহলের।
সম্প্রতি ভারত সীমান্তবর্তী জেলা কুষ্টিয়ার করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছালে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। আর দৌলতপুর এই জেলার ভারত সীমান্ত ঘেঁষা বড় আয়তনের উপজেলা।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply