দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলাব্যাথা আক্রান্ত রোগী। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে হোক আর সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জার কারনে হোক বা করোনার কারনে হোক সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। লোক লজ্জার ভয়ে বা সামাজিক বিড়ম্বনার কারনে এসব উপসর্গ থাকার পরও অনেকে করোনা পরীক্ষা করাতে চান না। রয়েছে করোনা পরীক্ষায় অনীহা। শহরের তুলনায় গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারেও রয়েছে চরম অনীহা। ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশী। কুষ্টিয়া শহর থেকে দৌলতপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার এবং দৌলতপুর উপজেলা সদর থেকে সীমান্ত এলাকা প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার। গত দুই সপ্তাহ ধরে সীমান্ত এলাকাসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবারে জ্বর, সর্দি, গলাব্যথা ও খুসখুসে কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশী। এসব রোগীরা স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ খেয়ে রোগ সারানোর চেষ্টা করছেন। আবার অনেকে করোনা উসর্গ নিয়ে মারাও গেছেন।
মহিষকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম জানান, তার এলাকার প্রতিটি বাড়িতে কেউ না কেউ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত রয়েছেন। স্থানীয়ভাবে তারা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও অনেকে এসব রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন। শুধু মহিষকুন্ডি নয় এমন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিটি গ্রামেই রয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা ও মাথাব্যথা রোগী সংখ্যা বেড়েছে আশংকাজনক হারে। অন্যান্য রোগীর চেয়ে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা এখন অনেক বেশী।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, আগে গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার কম ছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা, মাথাব্যাথা রোগে ভুগছেন এমন অনেকেই করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। আর এসব উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গ্রামের মানুষই বেশি। তিনি বলেন, চলতি মাসে এ উপজেলায় ২০৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত এবং ১০জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন প্রতিদিন হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এসব রোগীর অর্ধেকের বেশি সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত। তবে এটি সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা বা মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে হঠাৎ জ্বর, শুষ্ক কাশি, মাথাব্যথা, মাংসপেশীতে ব্যাথা হতে পারে। এছাড়াও হতে পারে গলা ব্যথা এবং সর্দি। সাধারণ ফ্লু’তে অধিকাংশ মানুষ কোন চিকিৎসা ছাড়াই সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিলে আতংকিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জ্বর, সর্দি, কাশি বা গলা ব্যাথা হলেই করোনা হবে এমনটি নয়। তবে এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি করোনা পরীক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply