দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নিজ স্কুলের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানির অভিযোগে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে নাহারুল ইসলাম (৪৩) নামে এক শিক্ষকের অপসারণ দাবী করেছে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষককে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়েছে দৌলতপুর থানা পুলিশ। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে লক্ষ্য করে জুতা ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ জানিয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আল্লারদর্গা হাইস্কুলে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৩দিন আগে আল্লারদর্গা হাইস্কুলের ইংরেজী বিভাগের সহকারী শিক্ষক নাহারুল ইসলামের আল্লারদর্গা হলুদবাড়ীয়া গ্রামের বাড়ীতে প্রাইভেট পড়তে যায় একই স্কুলের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী। এসময় ওই শিক্ষকের স্ত্রী বাড়ী না থাকায় ছাত্রীকে একা পেয়ে কু-প্রস্তাব দেয় শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। শিক্ষকের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ওই ছাত্রী স্কুলে ফিরে তার ঘটনাটি সহপাঠীদের জানায়। এ ঘটনা জানার পর স্কুলের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষককের কাছে আবেদন জানায়। ঘটনার ৩দিন পার হলেও অভিযুক্ত শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জুতা স্যান্ডেল নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভে এলাকার অভিভাবকরাও অংশ নিলে স্কুলের পরিবেশ নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক নাহারুল ইসলামকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। থানায় নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নাহারুল ইসলামকে লক্ষ্য করে জুতা-স্যান্ডেল ছুড়ে মারে। বিষয়ে আল্লারদর্গা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম জানান, শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা আমাকে জানিয়েছিল। বিষয়টি আমি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে অবহিত করেছি। ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই শিক্ষার্থীরা বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবী করে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন। ক্লাস চলাকালে ছাত্রীদের সাথে অসাদাচারণ ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দিকে শিক্ষক নাহারুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিছু কুচক্রী মহল স্কুলে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বান্বিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। শিক্ষক নাহারুল ইসলামকে আটকের বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানান, আটক শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় যৌন হয়রানি, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের হয়েছে, যার নং ৩৯। স্কুলের এক ছাত্রীর বাবা ছিদ্দিকুর রহমান বাদী এ মামলা দায়ের করেন।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply