নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় ঘর পাচ্ছেন ১৬৫ গৃহহীন পরিবার মুজিব শতবর্ষে উপলক্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশের সব জেলায় ৫৩ হাজার ৩৪০ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মধ্যে আগামীকাল ২০ জুন জমিসহ ঘর দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় মোট ১৬৫টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার পাবেন। গতকাল শুক্রবার (১৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান- কুষ্টিয়ার সব উপজেলায় গৃহনির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের জন্য দুইশতক জমিসহ নির্মিত ঘর এরই মধ্যে দলিল কবুলিয়ত ও মিউটেশন সম্পন্ন করে রোববার ২০ জুন উপকারভোগীদের মধ্যে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তত রাখা হয়েছে। কুষ্টিয়ার উপকারভোগীদের মধ্যে সদর উপজেলায় ২০টি, কুমারখালী উপজেলায় ৬টি, খোকসা উপজেলায় ৩২টি, মিরপুর উপজেলায় ৩০টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ৫৫টি এবং দৌলতপুর উপজেলায় ২২টি পরিবারকে এ ঘর দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এছাড়া ২য় পর্যায়ের ২য় ধাপে আরো ৫৬টি গৃহ নির্মাণ বাবদ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ভুমিহীন ও গৃহহীন উপকারভোগী নির্বাচন ও গৃহ নির্মাণ কাজ চলমান আছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয়ধাপে আশ্রয়ন-২ প্রকল্প হতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৫টি, কুমারখালী উপজেলায় ৭টি, খোকসায় ৯টি, মিরপুর উপজেলায় ৩০টি এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৫ টিসহ মোট ৫৬টি।
জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম আরো জানান- ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নকল্পে আশ্রয়ন-২ প্রকল্প হতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় জেলায় ৪৯৭৫টি “ক” শ্রেনীর পরিবার চিন্থিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬৪৮টি, ভেড়ামারায় ১০০টি, কুমারখালী উপজেলায় ১১০৩টি, খোকসা উপজেলায় ৫৯৬টি, মিরপুর উপজেলায় ১৬৪৮টি, এবং দৌলতপুরে ২৫৯টি পরিবার চিন্থিত করা হয়েছে। চিন্থিত পরিবারকে অনধিক ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান পূর্বক গৃহনির্মাণ করে দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৫৮টি, কুমারখালী উপজেলায় ৭০টি, খোকসা উপজেলায় ৭১টি, মিরপুর উপজেলায় ১১৬টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ১৫৫টি এবং দৌলতপুরে ৮৮টি ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবারের অনুকুলে বন্দোবস্তযোগ্য খাস জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে জেলার ৬টি উপজেলায় ৩৩৭টি ঘর নির্মাণ শেষে হস্তান্তর করা হয়েছে। নির্মানকৃত প্রতিটি ঘরের বন্দোবস্ত প্রদান, কবুলিয়ত সম্পাদন ও নামজারি সম্পন্ন করা হয়েছে। ২ কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি গৃহে রান্নাঘর, বৈদ্যুতিক সংযোগ, টয়লেট ও ইউটিলিট স্পেসসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমীন আক্তার, এনডিসি হাফিজুর রহমানসহ ইলেক্ট্রনিক, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব আনিসুজ্জামান ডাবলুসহ প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই শুরু হয় গৃহহীন পুনর্বাসন কার্যক্রম। পরবর্তিতে ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গৃহহীন মানুষদের পুনর্বাসনের নির্দেশনা প্রদান করেন। তাঁর নির্দেশনাই শুরু হয় আশ্রয়ন প্রকল্প। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ছিল অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তি। যার ফলশ্র“তিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন। তিনি দারিদ্রমুক্ত, সামাজিক ন্যায় বিচার, মানবাধিকার, অংশীদারিত্বমুলক বিকাশমান অর্থনীতির সুদৃঢ় ভিত্তি বাস্তবায়নে ভুমিহীন, গৃহহীন, অধিকার বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে ঔদার্য, সাহসিকতা, মহতি পরিকল্পনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গ্রহন করায় কুষ্টিয়া জেলাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আপনাদের সহযোগিতা সব সময় পাচ্ছি আগামীতে আরো সহযোগতিা পাবো বলে আশা রাখি। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার উন্নয়ন এবং যে কোন ভাল কাজে আমি আপনাদের সাথে আছি।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply