1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

পরিবেশবান্ধব উন্নতমানের সার তৈরি হচ্ছে মানববর্জ্যে

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ৫ জুন, ২০২১
  • ৩২৫ মোট ভিউ

কৃষি প্রতিবেদক ॥ মানববর্জ্য থেকে উন্নতমানের সয়েল কন্ডিশনার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে দুটি বেসরকারি সংস্থা। টাঙ্গাইলে সফল পরীক্ষার পর, এবার সৈয়দপুরে চলছে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। প্রক্রিয়াজাত এই কন্ডিশনার উন্নতমানের সার- যা পরিবেশবান্ধব। রাজধানীর মতো বড় শহরগুলোতে এ ধরনের উদ্যোগ নিতে নগর কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। জনসংখ্যা তো বাড়ছেই, বাড়ছে পয়োবর্জ্যও। এর ব্যবস্থাপনায় এখনই নজর না দিলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে নাগরিক স্বাস্থ্য। প্রয়োজন আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার। এতে পরিবেশের তো একটা সুরাহা হবেই, উল্টো এই বর্জ্যই সম্ভাবনা দেখাবে কর্মসংস্থান ও আয়ের। উদাহরণ দেখতে যেতে হবে নীলফামারীর সৈয়দপুরে। সৈয়দপুরের পয়োবর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের সার। পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা। সেখানে মানুষের বর্জ্য থেকে সরাসরি তৈরি হচ্ছে সয়েল কন্ডিশনার নামে উন্নতমানের জৈব সারযুক্ত মাটি। এ কাজে স্থাপন করা হয়েছে কো-কম্পোস্ট প্ল্যান্ট।
দেশে প্রতিদিন শত শত টন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আর মানববর্জ্য নিয়ে নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। তবে, ২০১৫ সালে টাঙ্গাইলের সফিপুরে মানববর্জ্যের প্ল্যান্ট নির্মাণ করে, ওয়াটার এইড। এতে ৫ ধাপে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে তৈরি হয়, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক, সয়েল কন্ডিশনার। মাসে এর উৎপাদন, দুই টন সয়েল কন্ডিশনার। এবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রায় দুই একর জমিতে, একই ধরনের প্ল্যান্ট তৈরি করেছে সংস্থাটি। যাতে এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে উৎপাদন। বাড়িবাড়ি গিয়ে বর্জ্য সংগ্রহের তদারকি করছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এই সয়েল কন্ডিশনার পরিবেশবান্ধব তো বটেই, রাসায়নিক সারের চেয়ে উৎপাদন খরচও কম। প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে ওয়াটার এইড বাংলাদেশ ও সমাজকল্যাণ সংস্থা (এসকেএস) ফাউন্ডেশন। তিনটি ট্যাংক পরিবহণে (ভেকুট্যাক) প্রায় ২৮ হাজার বাড়ির পয়োবর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর সেগুলো চলে যাচ্ছে স্থানীয় কো-কম্পোস্ট প্ল্যান্টে। সেখানে আছে ডায়িং বেড। বেডে রয়েছে হরেক রকম পাথর। পয়োবর্জ্যের ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে ওগুলো। এতে আটকে যায় অজৈব বর্জ্য। পাথরের তিন স্তর পার হয়ে তরল অংশ নিচে নেমে যায়। তারপর সেটা যায় অন্য আরেক বেডে। তিন দিন পর কালো রঙের তরল বিভিন্ন বেড ঘুরে মোটামুটি স্বচ্ছ ও দুর্গন্ধমুক্ত হয়। ওই তরলেই মিশে আছে গাছের জন্য দরকারি পুষ্টি উপাদান। আরও দেখা গেছে, পয়োবর্জ্য থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ার পর পচনশীল উপাদানগুলোর সঙ্গে আনুপাতিক হারে মিশিয়ে নেওয়া হয় কাঠের গুঁড়ি। ওটা থেকে তৈরি হয় সয়েল কন্ডিশনার, তথা উর্বর মাটি। গবেষকরা বলছেন, আদিকাল থেকেই পয়োবর্জ্য নাইটসয়েল (পয়োবর্জ্য মিশ্রিত মাটি) হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। সে ক্ষেত্রে পয়োবর্জ্যের মাধ্যমে বর্তমানে যে সয়েল কন্ডিশনার তৈরি হচ্ছে তা মূলত ওই নাইটসয়েলেরই আধুনিক সংস্করণ। এই মাটিতে কোনো জীবাণু বা দুর্গন্ধ থাকে না। পয়োবর্জ্য থেকে উৎপাদিত সার ব্যবহার নিয়ে কৃষকদের মাঝে যাতে কোনো দ্বিধা কাজ না করে সেজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে সংস্থা দুটো। ওয়াটার এইড বাংলাদেশের প্রকল্প কর্মকর্তা বিপ্লব বসাক বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের একটি প্ল্যান্ট থেকে বছরে ১০০ টনের বেশি সার উৎপাদিত হবে। এই সার ব্যবহারে জমিতে পানি, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক খরচ কমে আসে। সাধারণ সারের তুলনায় দ্বিগুণ উৎপাদন পাওয়া সম্ভব।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page