1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০২:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

ফিরল বিলুপ্তপ্রায় পিয়ালি মাছ

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১
  • ৪১০ মোট ভিউ

কৃষি প্রতিবেদক ॥ করোনার এই সংকট মুহূর্তেও একের পর এক বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় পোনা মাছ উৎপাদন করে চলছে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। ইতিমধ্যে বিলুপ্তপ্রায় ৬৪টি প্রজাতির মধ্যে ২৭টি দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বিএফআরআই। এবার তালিকায় সংযোজন হলো বিলুপ্তপ্রায় ‘পিয়ালি মাছ’। গত সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করে বিএফআরআই। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বগুড়ার সান্তাহারে অবস্থিত প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রে এই সফলতা অর্জিত হয়। ফলে এখন থেকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় পিয়ালি মাছের পোনা উৎপাদন করে চাষের জন্য মাঠ পর্যায়ের চাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।
বিএফআরআই থেকে জানানো হয়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে অবস্থিত প্লাবন ভূমির উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ গবেষণার ফলে পিয়ালি মাছের এ সাফল্য এসেছে। দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসা পুষ্টি মানে ও স্বাদে সমৃদ্ধ দেশীয় ছোট মাছের মধ্যে পিয়ালি মাছ অন্যতম বলে জানান গবেষকরা।
সান্তাহার উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও গবেষক দলের প্রধান ড. ডেভিড রেন্টু দাস জানান, যমুনা ও আত্রাই নদীসহ বিভিন্ন উৎস থেকে পিয়ালি মাছের পোনা সংগ্রহ করে প্রথমে পুকুরে নীবিড়ভাবে প্রতিপালন করা হয়। প্রতিপালনকালে মাছের খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে খাবার দেওয়া হয়। প্রাকৃতিক জলাশয়ে পিয়ালি মাছ মূলত প্লাংকটন (শ্যাওলা) ভোজী। তাছাড়া জিএসআই ও হিস্টোলজি পরীক্ষণের মাধ্যমে পিয়ালি মাছের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করা হয়। এ মাছের প্রজনন মৌসুম হচ্ছে মে-আগস্ট এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস।
সান্তাহার উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও জানান, পিয়ালি মাছের বৈজ্ঞানিক নাম- অংঢ়রফড়ঢ়ধৎরধ লধুধ. পিয়ালি মাছ দ্রুত বর্ধনশীল ও খুবই সুস্বাদু। প্রতি ১০০ গ্রাম পিয়ালি মাছে মেথিয়োনিন ৭৫০ মিলিগ্রাম, সিস্টিন ৪২০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪৩০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৬৭০ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৫০ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক ১২.৮ মিলিগ্রাম, আয়রন ২৫ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ৮.২১ মিলিগ্রাম, এবং ১.৪০ শতাংশ কপার রয়েছে। যা অন্য অনেক দেশীয় ছোট মাছের তুলনায় অনেক বেশি। ক্যালসিয়াম অভাব পূরণে এ মাছ খুব কার্যকরী।
গবেষক দলে ছিলেন, সান্তাহার উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ডেভিড রেন্টু দাস, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও মালিহা খানম। তারা জানান, পিয়ালি মাছের দৈর্ঘ্য ৫ থেকে ১৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর দেহ লম্বা ও পার্শ্বীয় চাপা। বয়স্ক পুরুষ মাছের পেট হলুদাভাব থাকে এবং স্ত্রী মাছের চেয়ে আকারে একটু বড় হয়। স্ত্রী মাছের পেট ধবেধবে সাদা ও হালকা স্ফীতকার হয়ে থাকে। পিয়ালি মাছের শরীরের আঁশ প্রতি বছর ঝরে পড়ে এবং নতুন আঁশ তৈরি হয়। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, বর্তমানে কাজলী, কাকিলা, রানী ও গাং টেংরাসহ আরও সাতটি মাছ নিয়ে গবেষণা চলছে। ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page