ঢাকা অফিস ॥ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথের উল্টো দিকে হাঁটছে। বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত সংবিধানের ১৩ (ক) তে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতকে প্রধান করা হয়েছে, সেখানে বঙ্গবন্ধু-কন্যার অর্থমন্ত্রী বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে ব্যক্তিখাতকে ড্রাইভিং সিটে বসানোর কথা সগৌরবে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, জিয়া-এরশাদ যা পারেননি বর্তমান সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত খাতকে ব্যক্তিখাতে তুলে দেয়ার কাজটি সম্পন্ন করেছে। পিপিপির ঘোমটা খুলে বন্ধ করে দেয়া পাটকলগুলোকে ব্যক্তিমালিকদের দিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি সংবিধানের পরিপূর্ণ ব্যত্যয়, অর্থমন্ত্রীঘোষিত এসব পদক্ষেপ জনগণ গ্রহণ করবে না। গতকাল সোমবার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবিতে ৭ জুনের হরতালে শহীদ শ্রমিকদের স্মরণ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ওই হরতালে শ্রমিকরা এগিয়ে এসেছিল বলেই ৭ জুনের হরতাল সফল হয়েছিল। শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তি রচনা করেছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জন ’৭২-এর সংবিধান। কিন্তু অর্থমন্ত্রী বাজেটে কেবল ব্যক্তিখাতকে প্রাধান্যই দেননি, কোভিডে কর্মহীন শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের পুনর্বাসনেরÑকর্মসংস্থান সৃষ্টির কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। এই বাজেট সাধারণ জনগণকে কিছুই দেয়নি। ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়, কোভিড নিয়ন্ত্রণে সেখানে ভ্যাকসিন প্রধান অস্ত্র, সেখানে ভ্যাকসিন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রেও ব্যক্তি বিশেষের বাণিজ্যিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ায় বাংলাদেশের এই অবস্থা। সভায় চীনা টিকার মূল্যের গোপন তথ্য প্রকাশ করার পিছনে কী ষড়যন্ত্র কাজ করছে তা উদঘাটন করার দাবি জানান তিনি। সভায় বলা হয়, যেখানে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য চুরির কথিত অভিযোগে নারী সাংবাদিককে দৈহিক নির্যাতন করে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে কাউকে ওএসডি করে থেমে থাকার কোনো সঙ্গত কারণ নেই। সভা সঞ্চালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সাধারণ সম্পাদক কমরেড কিশোর রায় এবং বক্তব্য রাখেন মহানগর নেতা কমরেড জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, কমরেড মো. তৌহিদ, কমরেড কাজী আনোয়ারুল ইসলাম টিপু, কমরেড সাদাকাত হোসেন খান বাবুল, কমরেড বেনজীর আহমেদ, কমরেড মুর্শিদা আখতার নাহার, কমরেড মাহমুদুল হক সেনা, কমরেড শিউলী সিকদার, কমরেড তাপস কুমার রায়, কমরেড অতুলন দাস আলো, কমরেড মামুন প্রমুখ। সভার শুরুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সভায় কোভিড মহামারি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরে মাস্ক বিতরণ করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।