ঢাকা অফিস ॥ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এএসআই নন্দ দুলাল রক্ষীতের জামিন আবেদন শুনানি আগামী ২৭ জুন ধার্য্য করেছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও নন্দ দুলাল রক্ষীতের জন্য জামিনের শুনানি করতে চাইলে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল আগামী ২৭ জুন তারিখে জামিন শুনানির আদেশ দেন। এর আগে গত ৯ জুন এই দুই আসামির পক্ষে ওই আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন। গতকাল রোববার দুপুরে ওই মামলার জামিন শুনানির জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেনÑ বাংলাদেশ বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, মেজর (অব:) সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এ এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতের পক্ষে জামিনের জন্য দরখাস্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু, আদালত গতকাল শুনানি না করে আগামী ২৭ জুন তারিখে জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালত থেকে বেরিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা এই মামলার ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসামি ওসি প্রদীপের পক্ষে জামিনের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু, করোনার কারণে আদালত জামিন আবেদনের শুনানি করেননি। আগামী ধার্য তারিখে আমাদের বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করব। আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি। এর আগে ১০ জুন আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে কক্সবাজার কারাগারে আনা হয়।’ উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করে এবং টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে। এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের করা মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ আসামিকে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply