ঢাকা অফিস ॥ শ্রীলঙ্কার পর এবার আফ্রিকার দু-একটিসহ অন্যান্য দেশও বাংলাদেশের কাছে ঋণ চাইছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ এখন অন্য দেশকে ঋণ দেয়। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, দেশে মানুষের দারিদ্রের হার ৪১ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমেছে। দেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে উন্নীত হয়েছে। এক সময়ে যে দেশের বাজেট নির্ভর করতো প্যারিস কনসোর্টিয়াম মিটিংয়ের ওপর, অর্থমন্ত্রীকে ছুটে যেতে হতো প্যারিস কনসোর্টিয়াম মিটিংয়ে, সেই বাংলাদেশ এখন অন্য দেশকে ঋণ দেয়। আমরা শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ১০ বছর মেয়াদে ঋণ দিয়েছি। অন্যান্য দেশও ঋণ চাচ্ছে এবং সেখানেও দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এটাই বাস্তবতা, কেউ স্বীকার করুক বা না করুক। হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বাংলাদেশের এই অগ্রগতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এই অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ। বাংলাদেশের দু-একটি পত্রিকাকে দেখতে পাই, এটা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। এই অগ্রগতি আসলে কতটুকু সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অপচেষ্টা চালানো হয়। এই অপচেষ্টা আজকে হচ্ছে তা নয়, এটা গত ১২ বছর ধরেই হচ্ছে। এবং তা সত্ত্বেও দেশ এগিয়েছে। দেশের মানুষের দিকে তাকালেই তা বোঝা যায়। ১২ বছর আগের কোনো সমাজিক অনুষ্ঠানের ভিডিওচিত্র দেখুন এবং আজকের সামাজিক অনুষ্ঠানের ভিডিও চিত্র দেখুন। আজকের মানষগুলোর চেহারা আগের তুলনায় বেটার (ভালো), কাপড়-চোপড়ও অনেক ভালো। কোন কোন দেশ ঋণ চাচ্ছেÑজানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক বিভাগ এটা নিয়ে কাজ করছে। আফ্রিকার দু-একটি দেশে এই তালিকায় রয়েছে। এগুলো যেহেতু এখনো প্রক্রিয়াধীন, সুতরাং এগুলো নিয়ে বোধহয় কথা বলার সময় আসেনি। এসময় বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার চেয়েও চিত্রনায়িকা পরীমনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। পরীমনির প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের কোথায় কে গিয়ে মধ্যরাতে মদ্যপান করল আর সেখানে মদপান করে ভাঙচুর হলো, সেই ভাঙচুরের প্রেক্ষিতে সেখানে কিছু ঘটনা ঘটল। সেটি কি জাতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ? কে কোথায় মধ্যরাতে মদপান করে কোন ঘটনা ঘটালো, সেটি নিয়ে যেভাবে সবাই মত্ত হয়ে গেল। বিষয়টি কি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিলে? এটি একটি বাজে বিষয়। আমি এটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না কেউ হেনস্তা হলে সেটি যেমন ঠিক নয়, তেমনি কেউ অহেতুক হয়রানি হওয়াও ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। সংসদে পরীমনির বিষয়টি নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদের আলোচনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকে দেখলাম এ বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে সংসদে বক্তব্য রেখেছেন। আমার কাছে মনে হলো তার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার চেয়েও চিত্রনায়িকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। সেজন্য এটা নিয়ে তিনি সংসদে বেশ কয়েক দিন বক্তব্য রেখেছেন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- নিয়ে একটি গোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ও তার মিত্ররা এসব অপচেষ্টা চালায়। আবার বাংলাদেশে কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা মনে করেন তারা মহাজ্ঞানী। যখন নিজেরা মনে করেন তারা মহাজ্ঞানী, অপরের ভুল না ধরলে তিনি যে জ্ঞানী সেটি প্রমাণ করার সুযোগ হয় না। সেজন্য সব বিষয়ে ভুল ধরার জন্য কিছু ব্যক্তি আছেন। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা দেশের কোনো অগ্রগতি নিয়ে প্রশংসা দেখতে পাই না। শুধু দেশের সমালোচনায়ই ব্যস্ত। এ প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্যই দরকার আছে। তারা কোনো জায়গায় কোনো কিছুর ব্যত্যয় হলে সমালোচনা করবে। কিন্তু একই সঙ্গে দেশের কোনো অগ্রগতি, অর্জন হলে সেটির প্রশংসা করাও দায়িত্ব, এরা এগুলো করছেন না। এগুলোর সঙ্গে কিছুকিছু কাগজেও এদের কথাগুলো ফলাও করে প্রচার করা হয়। সুতরাং এদের সবাই চেনে।