1. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সন্তানদের শিক্ষার জন্য মুসলিম উম্মাহর প্রতি আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ইয়াসিন-মাহমুদা স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তির টাকা প্রদান ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা ইবির ইংরেজি বিভাগে পিএইচডি সেমিনার ইবিতে জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী পালিত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনার আওতায় ইবিতে ৩টি প্রশিক্ষণ কর্মশালা  জীবননগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু মিরপুরে পিবিজিএসআই স্কিমের উপজেলা পর্যায়ে ওয়ার্কশপ কুমারখালীতে ইচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিনের অভিহিতকরণ সভা সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা কুষ্টিয়া জেলা পরিষদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দপত্র বিতরণ

বায়োফিউমিগেশনের মাধ্যমে সব্জীর রোগ নিয়ন্ত্রন

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ২২ মে, ২০২১
  • ৩৫৩ মোট ভিউ

কৃষি প্রতিবেদক ॥ টমেটো, বেগুন, মরিচ ইত্যাদি সবজিতে অন্যান্য রোগের পাশাপাশি গোড়া পচা, ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া ও চারার মড়ক প্রধান সমস্যা। সবগুলোই মাটিবাহিত রোগ। এসব রোগের জীবাণু মাটিতে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকতে পারে। জীবানু থাকা মাটিতে সুস্থ সবল চারা লাগালেও সেসব চারা জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে রোগ সৃষ্টি করতে পারে। অনুকূল পরিবেশ পেলে এ রোগ মহামারী আকার ধারণ করে এবং সম্পূর্ণ চারা বা গাছ ধ্বংস করে ফেলে। চারার মড়ক বা ড্যাম্পিং অফ প্রায় সব সবজি ফসলেরই একটি মারাত্মক রোগ। বীজতলায় বীজ গজানোর পর মাঝে মাঝে চারার মাটিসংলগ্ন স্থানে পচন দেখা যায়। পচা জায়গা থেকে চারা ভেঙে ঢলে পড়ে এবং শেষে মারা যায়। আর জমিতে চারা রোপণের পর যেকোনো বয়সের সবজিগাছই চারার মতো একইভাবে মাটি সংলগ্ন স্থান থেকে পচতে শুরু করে এবং ঢলে পড়ে। ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগে আক্রান্ত গাছ হঠাৎ নেতিয়ে পড়ে। এ রকম আরো বেশ কিছু রোগ আছে যেগুলো মাটিবাহিত এবং শুধু রোগনাশক ¯েপ্র করে ভালো করা যায় না। সেজন্য বিজ্ঞানীরা মাটিতে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত রোগজীবাণুকে ধ্বংস করতে মাটি শোধনের এমন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যা প্রয়োগ করে সবজি ফসলকে মাটিবাহিত বিভিন্ন রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচানো যেতে পারে। একধরনের গাছ দিয়েই এই চিকিৎসা করা যায়। এই গাছও আর এক ধরনের ফসল। কপিগোত্রীয় বিভিন্ন গাছ বিশেষ করে মূলা, সরিষা, কপি ইত্যাদি গাছ মাটিতে মিশিয়ে দিলে তা থেকে মাটিতে এক ধরনের গ্যাস নিঃসরিত হয়। আইসো থায়োসায়ানেট (আইটিসি) নামের সেই বিষাক্ত গ্যাসই মাটিতে লুকিয়ে থাকা জীবাণুদের ধ্বংস করে দেয়। যেহেতু গাছ মানে জীব (বায়ো), সজীব উপকরণ ব্যবহার করে তার গ্যাসকে (ফিউম) কাজে লাগিয়ে মাটি শোধন করা হচ্ছে তাই এ পদ্ধতির নাম দেয়া হয়েছে ‘বায়োফিউমিগেশন’। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে এ পদ্ধতির বাস্তব প্রয়োগ শুরু হয়েছে। কম্বোডিয়ার একটি আইপিএম সবজি কৃষক মাঠ স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, সে স্কুলের চাষি ভাইয়েরা এ পদ্ধতি ব্যবহার করে মাঠে পরীক্ষা স্থাপন করেছেন। যে বীজতলায় বায়োফিউমিগেশন করা হয়নি সেখানকার টমেটো ও কপির চারাগুলো ড্যাম্পিং অফ রোগে আক্রান্ত অথচ বায়োফিউমিগেশন করা বীজতলায় ড্যাম্পিং অফ রোগের আক্রমণ নেই বললেই চলে। মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন বালাই ও রোগজীবাণুকে এ ধরনের বায়োসাইড ব্যবহার করে দমিয়ে রাখার কৌশল একেবারেই নতুন, তবে ব্যয় সাশ্রয়ী। কিন্তু গাছ হিসেবে চওড়া পাতার যেকোনো জাতের সরিষাগাছ এ কাজের জন্য উত্তম। অগত্যা শিয়ালমূত্রা আগাছা দিয়েও এ কাজ চালানো যায়। এ আগাছা আমাদের দেশে রাস্তার ধারে ও ডোবানালার পাশে খুব জন্মে। ব্যাপকভাবে বিশাল জমিখন্ডে হয়তো এ পদ্ধতির ব্যবহার লাভজনক হবে না, তবে বীজতলার ছোট্ট একখন্ড জমিতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে চারার মড়ক নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। ইন্ডিয়ান সরিষা ভালো ও বীজের দাম কম। তবে মূলা ও চীনা সরিষা শাকও এ কাজে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। বায়োফিউমিগেশন করতে হলে প্রথমে বীজতলার উপরের মাটি ৭.৫ থেকে ১০ সেন্টিমিটার গভীর করে তুলে ফেলতে হবে। মাটি তোলার পর জায়গাটা একটা অগভীর চৌবাচ্চার মতো মনে হবে। তারপর বাড়ন্ত বয়সের সরিষা বা কপি (চীনা বাঁধাকপি/বাটিশাক) সংগ্রহ করে কুচি কুচি করে কাটতে হবে। কুচি যত ছোট হবে তত বেশি আইটিসি গ্যাস বের হবে। তারপর প্রতি বর্গমিটার জায়গার জন্য ৫ কেজি হারে কাটা কুচিগুলো মাটি তুলে ফেলা জায়গায় পুরু করে বিছিয়ে দিতে হবে। এরপর তুলে রাখা মাটি এর ওপর দিয়ে মাটির সাথে গাছের কুচিগুলো মিশিয়ে দিতে হবে। মেশানোর পর সেখানে পানি দিয়ে ভালো করে ভেজাতে হবে। ভেজানোর পর সম্পূর্ণ বীজতলার মাটি কালো মোটা পলিথিন দিয়ে ঢেকে পলিথিনের চার পাশ মাটির মধ্যে পুঁতে দিতে হবে যাতে ভেতরের কোনো গ্যাস বাইরে না আসে। এভাবে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ রেখে দিলে গাছের কুচিগুলো পচে গ্যাস ছাড়বে ও সেই গ্যাস মাটির ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও কৃমিকে মেরে ফেলবে। উপরন্তু গাছ পচে সবুজ সারের মতো মাটিতে জৈব পদার্থ যোগ করে উর্বরতা বাড়াবে। পরে পলিথিন উঠিয়ে ফেলে দু-একদিন রোদ খাওয়ানোর পর ফের চাষ দিয়ে বীজতলা তৈরি করে সেখানে বীজ বপন করলে রোগ কম হবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগ ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কমানো সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া কৃমিজনিত শিকড়ে গিঁট রোগও এ পদ্ধতিতে কমানো যায়। বেলে মাটিতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে বেশি সুফল পাওয়া যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Theme Customized By Uttoron Host

You cannot copy content of this page