কৃষি প্রতিবেদক ॥ বিনামুগ ডাল-১১ বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটিতে এ জাত বপনে অধিক ফলন পাওয়া যায়। বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে জমিতে পানি জমে গেলে দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হয়। তিন-চারটি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করে বীজবপন করতে হয়। অঞ্চলভেদে বপনের সময়ের তারতম্য রয়েছে। বরিশাল বিভাগের জেলাসমূহে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফেব্র“য়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বীজবপন সম্পন্ন করতে হবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বীজবপন সম্পন্ন করতে হবে। বিলম্বে বপন করলে ফলন হ্রাস পায়। হেক্টরপ্রতি ৩০ কেজি (একর প্রতি ১২ কেজি) বীজ ছিটিয়ে/লাইনে বপন করতে হয়। লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ১২ ইঞ্চি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২-৩ ইঞ্চি রাখতে হবে। জীবাণুসার ব্যবহার করলে ইউরিয়া প্রয়োগের প্রয়োজন নেই। এছাড়া উর্বর জমি হলে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যাবে না। দু’টি চাষ দেওয়ার পর নির্ধারিত পরিমাণ ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমপি সার ছিটিয়ে পুনরায় চাষ এবং মই দিতে হয়। জমি তৈরির শেষে চাষের আগে সম্পূর্ণ সার জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার ওপর নির্ভর করে সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। গ্রীষ্মকালীন মুগ বপনের সময় জমি শুষ্ক হলে সেচ প্রয়োগ করে জমিতে জো আসার পর চাষ দিয়ে বীজবপন করতে হয়। বীজবপনের পর জমি শুষ্ক হলে ২০-২৫ দিন পর আরও একটি সেচ দিতে হয়। জমিতে পরিমিত রস থাকলে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। চারা গজানোর পর জমিতে আগাছা দেখা দিলে ১৫-২০ দিনের মধ্যে নিড়ানি দিয়ে হালকাভাবে আগাছাগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হয়। এতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। উচ্চতা ৪৪-৪৮ সে.মি., জীবনকাল ৬৩-৬৫ দিন, ৮৫-৯০ ফল একই সঙ্গে পাকে, বীজের আকার বড় (১০০০ বীজের ওজন ৪২.৯৩ গ্রাম), বীজের রং সবুজ, পাতার রং গাঢ় সবুজ বর্ণের, বীজে আমিষের পরিমাণ ২২.৪%, হলুদ মোজাইক ভাইরাস ও সার্কোস্পোরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন, খরা এবং উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল। বিনামুগ-১১ হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ সহ্য ক্ষমতাসম্পন্ন। সাধারণত কোনো ছত্রাকনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। তবে ছত্রাকজনিত রোগের বেশি আক্রমণ হলে ডায়াথেন এম-৪৫ বা অন্য কোনো উপযুক্ত ছত্রাকনাশক ফসলি জমিতে ¯েপ্র আকারে প্রয়োগ করা যেতে পারে। পোকামাকড়ের আক্রমণ হলে ডায়াজিনন বা ম্যালাথিয়ন-৫৭ ইসি ইত্যাদি কীটনাশক মাত্রা অনুযায়ী ¯েপ্র করলে সুফল পাওয়া যায়। গড় ফলন হেক্টরে ১ দশমিক ৯ টন।
লেখক ঃ ম আবুল কালাম আজাদ