কাঞ্চন কুমার ॥ কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ডাক্তার ও নার্সদের সহযোগিতা করতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কামারুল আরেফিন এ স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করেন ও সেবা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন। মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় কাজ করবে উপজেলা ছাত্রলীগের ৩০ জন নেতাকর্মীরা। তারা প্রতিনিয়ত দায়িত্ব বন্টন করে হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা করবেন। উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা আসলাম হোসেন বলেন, “আমরা ছাত্রলীগ সব সময় সাধারন মানুষের পাশে ছিলাম, পাশে থাকবো। এই করোনাকালীন সময়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে সচেতন করে যাচ্ছি। সেই সাথে আমরা হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা শুরু করেছি। মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের সেবায় আমরা বদ্ধপরিকর।” মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পিযুষ কুমার সাহা জানান, “এই মুহুর্তে ১৪টি বেড রয়েছে যেখানে রোগী ভর্তি রয়েছে। এছাড়া ১৭টি বেড প্রস্তত করা হয়েছে। অক্সিজেনসহ অন্যান্য মেশিন ও এসি প্রস্তত করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মিরপুরে করোনাকালীন সময়ে ছাত্রলীগ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তাদের এ কর্মকান্ডে রোগীরা উপকৃত হবে বলে আশাবাদি আমরা।” তিনি আরো বলেন, সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে এই করোনা দুর্যোগ মোকাবেলা করা কঠিন। মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন করোনা ভাইরাস মোকাবেলাই চিকিৎসা সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।
এবার স্বেচ্ছাসেবক টিম দিয়ে জনবল বাড়াতে সাহায্য করলেন। এই মহামারী মোকাবেলা করা আমার জন্য অনেক সহজ হলো।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা লকডাউন মেনে চলে সকল নাগরিকদের ঘরে থাকার আহবান জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, “করোনাকালীন সময়ে লকডাউন নিশ্চিত, সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আক্রান্তদের সেবা করা জরুরী। মিরপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল রোগীদের সেবায় এগিয়ে এসেছে। এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।” উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ যাতে চিকিৎসার অভাবে মারা না যায়, চিকিৎসকরা যাতে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিতে পারে এজন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পাশে থাকবে। সেই সাথে করোনাকালীন সময়ে সবাইকে সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আহবান জানান। করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করায় অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অত্যন্ত মারাত্মক আকার ধারণ করায় মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবায় এবং স্যাম্পল দিতে আসা রোগীর সহযোগিতার জন্যে ৩০ জন তরুণ ছাত্রলীগের কর্মী নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছি। এই টিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সার্ব্বক্ষনিক সাহায্য করবে। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্যাম্পল দিতে আসা রোগীদের বসার জন্য সামিয়ানা টাঙ্গানোর ব্যবস্থা করে দেবো। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিনের সহধর্মীনী দিশা আরেফিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জোয়ার্দ্দার, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজরুল করিম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ, মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা, পৌরসভার কাউন্সিলর রেজা আহম্মেদ, মিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাঞ্চন কুমার হালদার, সাবেক সভাপতি আছাদুর রহমান বাবু, সাবেক আহবায়ক হুমায়ুন কবীর হিমু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ জোয়ার্দ্দার, সাংবাদিক রুবেল আহম্মেদ নান্নু, আলম মন্ডল, সুমন মাহমুদ, খন্দকার নাইম উদ্দিন প্রমুখ। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মিরপুর বাজারের ফল ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম মিরপুর হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিনের কাছে স্বেচ্ছায় ফল প্রদান করেন।