ঢাকা অফিস ॥ মিয়ানমারে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের পঞ্চম মাস চলছে এখন। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ১ ফেব্র“য়ারি ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তা যেমন তাদের মনোভাব বদলায়নি, তেমনি বিক্ষোভকারীরাও পিছু হটেনি। এ অবস্থায় বুধবার দেশটিতে ১৯৬২ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথম যে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছিল, সত্তর বছর পর তার বার্ষিকী পালন করলেন বিক্ষোভকারীরা। বুধবার চলমান জান্তাবিরোধীরা দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় নেমে আসেন। ৭০ বছর আগে জান্তাবিরোধী ওই বিক্ষোভের সময় সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নে শত শত লোক নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছিল। খবর এনডিটিভির। গত ১ ফেব্র“য়ারি দেশটির নির্বাচিত সরকারকে নির্বাচনে ‘অনিয়মের’ অজুহাতে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী। সরকার প্রধানসহ এনএলডির প্রধান নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শত শত নেতা-কর্মীকে হাজতে ঢোকানো হয়। তবে দেশটির গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকরা সেনাবাহিনীর এই হঠকারিতায় সাড়া না দিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের হিসেব অনুযায়ী এই পর্যন্ত ৮৮০ এরও বেশি লোককে হত্যা করেছে তারা। এদিকে দরিদ্র এই দেশটিতে দরিদ্র দেশটিতে হরতাল, করোনাভাইরাস মহামারি ও হাজার হাজার বেসামরিক কর্মচারী ও চিকিৎসকদের অসহযোগিতার কারণে অর্থনীতি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সকালে শতাধিক বিক্ষোভকারী ১৯৬২ সালের জান্তাবিরোধী প্রথম বিক্ষোভের দিনটির স্মরণে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় নেমে আসেন। ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে দ্রুত সরে পড়েন। ১৯৬২ সালের এই দিনে সে সময়কার ছাত্ররা ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ওই বিক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। স্লোগানে বলা হয়, ‘ফ্যাসিস্ট সেনাদের উচ্ছেদ করো’, ‘৭ জুলাইয়ের চেতনাকে জাগিয়ে তোলো, সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করো’। স্লোগান দিতে দিতে দুই মিনিটের মধ্যে তারা অদৃশ্য হয়ে যায়। এ সময় মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়েও প্রবিাদকারীরা রাস্তায় নামেন এবং সামিরিক পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। মিয়ানমারে ১৯৬২ সালে প্রথম সামরিক শাসন চালু হয়। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার মাত্র এক দশক পরেই সামরিক বাহিনী জনগণের সরকারকে উৎখাত করে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply