ঢাকা অফিস ॥ করোনাভাইরাস মহামারীর মারাত্মক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনে বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে টিকা কেনার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আমাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে, করোনা সংক্রমণ সংকটকে জাতীয় পর্যায়ে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। টিকা ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অন্যখাত থেকে বিশেষ করে মেগা প্রকল্পগুলোর বরাদ্দকৃত অর্থ ডাইভার্ট করে টিকা ক্রয় করা অতি জরুরি। এক লাখ, দুই লাখ, পাঁচ লাখ নয়, কোটি কোটি টিকা আমদানির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে করোনা ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। মহামারী মোকাবিলায় ‘সরকারের ব্যর্থতা’ তুলে ধরতে ভার্চুয়ালি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপির ‘করোনার ভাকসিন সংগ্রহ-বিতরণ-পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত কমিটি’, যার আহ্বায়ক সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোশাররফ। এই বিএনপি নেতা বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের পরিকল্পনা, টিকা সংগ্রহের রোডম্যাপ ও টিকাদান কর্মসূচির ভবিষ্যত পদক্ষেপ সম্পর্কে সকল তথ্য জনগণের সামনে সরকারকে উপস্থাপন করতে হবে। খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ ইতিমধ্যে করোনা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে সেসব দেশের প্রায় ৭০/৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা প্রদান করতে সমর্থ হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে সরকারের টিকা কূটনীতিতে চরম ব্যর্থতা, টিকা ক্রয়ে অনিয়ম, লোভ ও হঠকারিতার কারণে দেশে গত ৬ মাসে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। “এই হিসেবে এখন পর্যন্ত জনসংখ্যার তুলনায় অতি সামান্য সংখ্যক মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে তাতেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত অগ্রাধিকার তালিকা অনুসরণ করা হয়নি।” বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, “ডব্লিউএইচও ডিজির যে রিকমন্ডেশন অর্থাৎ আপনাকে মিনিমাম শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনেটেড করতে হবে। যদি এটা করা যায় তাহলেই আপনি ইউমুনিটি অর্জন করা, অর্থনীতিকে সচল রাখা সম্ভব হবে। “৭০ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে যদি ভ্যাকসিনেটেড করতে হয় আপনার মিনিমাম ২৫ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ দরকার। এক্ষেত্রে আমাদের হাতে মাত্র দেড় কোটি বা এক কোটি ৬০ লক্ষ ভ্যাকসিন আসছে। এটি যদি আপনি প্রতিদিন দুই বা চার লাখ মানুষকেও দেন তাহলে এক কোটি মানুষকে দিতে ২৫ দিন লাগবে। যদি ভ্যাকসিন হাতে থাকে। এই ব্যাপারে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই।” চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক আবদুস সালাম বক্তব্য দেন।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply