1. admin@andolonerbazar.com : : admin admin
  2. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

ম্যাকেঞ্জি-কার্টির ব্যাটে ক্যারিবিয়ানদের লিড

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩

 

ক্রীড়া প্রতিবেদক ॥ দিনের খেলা তখন শেষ হওয়ার অপেক্ষা। সাইফ হাসানের বল ফাইন লেগে খেলে একটি রান অনায়াসে নিয়ে কেসি কার্টি ছুটলেন দ্বিতীয় রান নিতে। ক্রিজে পৌঁছেও গেলেন প্রায়। কিন্তু বদলি ফিল্ডার রিশাদ হোসেনের সরাসরি থ্রো ছোবল দিল স্টাম্পে। বাংলাদেশের ফিল্ডাররা মেতে উঠলেন উচ্ছ্বাসে। আম্পায়ারের আঙুল উঠতে দেখে অবশ্য কার্টি অবাক। নন-স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে শরীরী ভাষায় বিস্ময় ফুটিয়ে তুললেন জশুয়া দা সিলভাও। সিদ্ধান্তটি মেনে নিতে পারছিলেন না দুই ব্যাটসম্যানের কেউই। ইউটিউব সম্প্রচারে রিপ্লে দেখে অবশ্য নিশ্চিত হওয়া গেল না, সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক। তবে শেষ বিকেলে মরে আসা আলোয় কার্টি ফিরলেন মাথা দুলিয়ে রাজ্যের হতাশা নিয়ে। আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলছিলেন কার্টি। শেষ বেলায় ওভাবে আউট হয়ে তার হতাশাই স্বাভাবিক। তবে দিনের সামগ্রিক বিচারে তাদের সন্তুষ্টই থাকার কথা। দিনশেষে ৩১ রানের লিড তো হয়েছে গেছে ক্যারিবিয়ানদের। উইকেট আছে ৪টি। সিলেটে দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ ‘এ’ দল প্রথম ইনিংসে অলআউট ২৩৭ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দিন শেষ করে ৬ উইকেটে ২৬৮ রান নিয়ে। আগের ম্যাচে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৮৬ রানের ইনিংস খেলা ওপেনার কার্ক ম্যাকেঞ্জে এ দিনও দুর্দান্ত সব স্ট্রোকের পসরা সাজিয়ে জানান দেন নিজের প্রতিভার। তবে এবারও কাছে গিয়ে সেঞ্চুরি পাননি তিনি। ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ২২ বছর বয়সী ওপেনার করেন ১২২ বলে ৯১। রান আউট হওয়া কার্টি ৫ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৬৮। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে খুব ভালো করতে পারেননি কেউই। ২ উইকেট শিকার করেছেন কেবল সাইফ হাসান, যিনি মূল বোলার নন। অন্যান্যের অবস্থা অনুমেয়। সবচেয়ে হতাশ করেছেন নাঈম হাসান। একদমই অধারাবাহিক ও খরুচে ছিলেন এই অফ স্পিনার। কিছুটা আঁটসাঁট বোলিং করেন কেবল বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলাম। দিনের শুরুটা হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং দিয়ে। বৃষ্টিবিঘিœত প্রথম দিনে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান ছিল তাদের। দ্বিতীয় দিনে তারা যোগ করতে পারে আর কেবল ৫২ রান। সেটিও মূলত শাহাদাত হোসেনের সৌজন্যে। তার একার ব্যাট থেকেই আসে এ দিন ৪৫ রান। সব মিলিয়ে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৭৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তরুণ ব্যাটসম্যান। শাহাদাতের সঙ্গে দিন শুরু করা নাঈম হাসান আউট হয়ে যান দিনের শুরুতেই। অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে ড্রাইভ খেলে তিনি সহজ ক্যাচ দেন স্লিপে। আগের দিন আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া সাদমান ইসলাম ব্যাটিংয়ে নামেন আবার। তবে এই ওপেনারও পারেননি সুবিধা করতে। আকিম জর্ডানের রাউন্ড দা উইকেটে করা বল তিনি ছেড়ে দেন না খেলে। ভেতরে ঢুকে বল উড়িয়ে দেয় বেলস। জর্ডারের পরের ওভারেই ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান তানজিম হাসান সাকিবও। শাহাদাতকে এ দিন কিছুটা সঙ্গ দিতে পারেন কেবল তানভির ইসলাম। একের পর এক সঙ্গী হারিয়ে শাহাদাত খেলতে থাকেন শট। জেইর ম্যাকঅ্যালিস্টারের শর্ট বলে চোখধাঁধানো এক র‌্যাম্প শটে ছক্কায় তিনি স্পর্শ করেন ফিফটি। ফিফটির পরও শট খেলে দ্রুত কিছু রান তোলেন তিনি। তবে ম্যাকঅ্যালিস্টারের দারুণ এক বাউন্সার তাকে নাড়িয়ে দেয় কিছুটা। মনোযোগ হারিয়ে পরের বলেই আলগা শট খেলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার লড়িয়ে ইনিংস। পরে তানভির ইসলামকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজের ৫ উইকেট পূর্ণ করেন জর্ডান। একাদশ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে দ্বিতীয়বার এই স্বাদ পেলেন বারবাডোজের ২৮ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার। বাংলাদেশ বোলিংয়ে নেমে সাফল্য পায় দ্রুতই। টেস্ট পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তেজনারাইন চন্দরপল। আগের ম্যাচে ৬ ঘণ্টার বেশি ব্যাটিং করে ৮৩ রান করা ওপেসার এবার ফেরেন ৪ রানে। যদিও বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছিল কি না, সেই সংশয় আছে। সেই ধাক্কা দ্রুতই সামাল দেন কার্ক ম্যাকেঞ্জি ও রেমন রিফার। উইকেটে যাওয়ার একটু পরই নাঈমকে ছক্কায় ওড়ান রিফার। একটু পরে তিনি নাঈমকেই ছক্কা মারেন আরেকটি। সেটির রেশ থাকতেই নাঈমের এক ওভারে ছক্কা ও চার মারেন ম্যাকেঞ্জি। পরে তিনি পুল করে ছক্কা মারেন তানজিম হাসানকে। এই পেসারের বলেই বাউন্ডারিতে ম্যাকেঞ্জির ফিফটি আসে ৬২ বলে। ১১৬ রানের জুটি ভাঙেন তানভির। ৩৭ রান করে বিদায় নেন রিফার। তার ফ্লিক শটে শর্ট মিড উইকেটে ডাইভিং ক্যাচ নেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন। একটু পর চা-বিরতির আগে-পরে সাইফ হাসানের জোড়া উইকেটে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। এই অফ স্পিনারকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে ম্যাকেঞ্জি চার মারার পর ফিল্ডার সীমানায় রাখেন অধিনায়ক আফিফ। এক বল পর জায়গায় দাঁড়িয়ে সেখান দিয়েই উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন ম্যাকেঞ্জি। সহজ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। চা-বিরতির ঘোষণা আসে তখনই। বিরতির পর ব্র্যান্ডন কিং ফিরতি ক্যাচ দেন সাইফ হাসানকে। আগের ম্যাচের মতোই শূন্য রানে ফেরেন তিনি। ক্যারিবিয়ানদের রান তখন ৪ উইকেটে ১৩৯। আলিক আথানেজ ও কেসি কার্টির জুটি সেখান থেকেই এগিয়ে নেয় দলকে। পঞ্চম উইকেটে দুজন যোগ করেন  ৭৯ রান। হতাশাময় দিনে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এই জুটি ভাঙেন নাঈম। পিচ করে সোজা যাওয়া ডেলিভারি বুঝতেই পারেননি ৪৫ রান করা আথানেজ। এরপর জশুয়া দা সিলভার সঙ্গে কার্টির জুটিও জমে উঠছিল। ৯০ বলে ৩৬ রানে থাকা কার্টি নাঈমের এক ওভারে দুই চার ও মাথার ওপর দিয়ে মারা ছক্কায় ফিফটি করে ফেলেন ৯৪ বলে। পরে নাঈমকে চার মারেন স্কয়ার ড্রাইভে, তানভিরকে সুইপে। ছক্কায় ওড়ান সাইফকে। এরপরই ওই রান আউট। দিনের বাতি সময়টায় কেভিন সিনক্লেয়ারকে (১*) নিয়ে কাটিয়ে দেন জশুয়া দা সিলভা (৪৭ বলে ৯*)

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ‘এ’ ১ম ইনিংস: ৬৫.৩ ওভারে ২৩৭ (আগের দিন ১৭৫/৫) (সাদমান ১৫, শাহাদাত ৭৮, নাঈম ১৭, তানজিম ০, তানভির ৪, খালেদ ০*; জর্ডান ১৮.৩-৪-৪৫-৫, ফিলিপ ১৫-০-৬৭-২, ম্যাকঅ্যালিস্টার ১৩-০-৫৮-১, রিফার ৭-২-১৫-০, সিনক্লেয়ার ১২-২-৪৪-২)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ ১ম ইনিংস: ৭৩ ওভারে ২৬৮/৬ (চন্দরপল ৪, ম্যাকেঞ্জি ৯১, রিফার ৩৭, আথানেজ ৪৫, কিং ০, কার্টি ৬৭, জশুয়া ৯*, সিনক্লেয়ার ১*; খালেদ ১৫-১-৪৬-১, তানজিম ১২-১-৪১-০, নাঈম ১৭-০-৮০-১, সাইফ ৭-০-৩৭-২, তানভির ১৯-৭-৪৫-১, আফিফ ৩-০-৯-০)।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com