ঢাকা অফিস ॥ চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রার ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন কঠিন হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষ থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও ঘোষণা সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, দেশের ২০২১-২০২২ অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সময় দেশের এবং আন্তর্জাতিক সকল বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হবে এবং ৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সেবা খাতে রপ্তানি হবে। এবার ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের রপ্তানির ধারা অব্যাহত থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের রপ্তানি খাত সচল রয়েছে এবং ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে আমাদের রপ্তানি খাতকে প্রনোদনা প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ এসেছে। রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য রপ্তানিকারক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। আমরা সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনো কঠিন কাজ হবে না। তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবসাবান্ধব সরকার দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার বেশকিছু সেক্টরকে পণ্য রপ্তানিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশের তৈরি পোশাকের পাশাপাশি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, আইসিটি, লেদার ও লেদারগুডস, প্লাস্টিক এবং কৃষিজাতপণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাত গুলোকে শক্তিশালি করে গড়ে তোলার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এ খাতগুলোর রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএ’র মতো বাণিজ্য চুক্তি করার প্রচেষ্টা অব্যাত রেখেছে। এ ছাড়া, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত কমার্সিয়াল কাউসেলরগণ কাজ করছেন। উল্লেখ্য, গত বছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সেবা খাতের রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্জিত হয়েছে পণ্যখাতে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সেবা খাতে ৬ ধশমিক ৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ দশমিক ৫৬ ভাগ অর্জিত হয়েছে। সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বক্তব্য রাখেন। ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাকে স্বাগত জানিয়ে এ সময় বক্তব্য রাখেন বিকেএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ’র সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যান্যুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুল ইসলাম এবং টেনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শাহীন আহমেদ।