ঢাকা অফিস ॥ চীন ও রাশিয়া থেকে দ্রুততম সময়ে টিকা আনতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে টিকা সংগ্রহে কাজ চলছে। আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় টিকা আনতে চীনের সঙ্গে চুক্তির কি অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানে। তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন, যে চীনের টিকা যোগান অব্যাহত থাকবে। প্রবাসীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশ গমনেচ্ছু ৪০ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেওয়া যায় কিনা, তা বিবেচনা করছে সরকার। এদিকে চীন থেকে দেড় কোটি টিকা সংগ্রহের আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে। চীন রাজি হলে আগামী জুন মাসেই ৫০ লাখ ডোজ টিকা এবং পরবর্তী দুই মাসে বাকি এক কোটি সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া রাশিয়া থেকে ৬০ লাখ টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠক এ সপ্তাহে হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্র। সব মিলিয়ে আগস্টের মধ্যে চীন-রাশিয়া থেকে ২ কোটি ১০ লাখ টিকা আনতে চায় সরকার। টিকা আনার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, রাশিয়া থেকে টিকা আনতে ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা ডকুমেন্ট চালাচালি হয়েছে। আমরা তাদের কাছ থেকে ৬০ লাখ টিকা সংগ্রহ করতে চাই। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে তিনটি ডকুমেন্ট সই করতে হবে। কীভাবে টিকা হস্তান্তর করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জুন, জুলাই ও আগস্টে প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে টিকা চাইছি। এ ছাড়া আমরা পাঁচ লাখ চীনের টিকা পেয়ে গেছি এবং আরও ছয় লাখ টিকা উপহার হিসেবে পাবো। এই পরিমাণ টিকা দিয়ে বর্তমান চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আগস্টের পরে অন্য জায়গা থেকেও টিকা সংগ্রহ করা যাবে বলে আমরা আরও কয়েক জায়গায় কথা বলছি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, আমরা রাশিয়ার সঙ্গে এ সপ্তাহে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠক করতে চাই। চীনের সঙ্গে যেভাবে আলোচনা হয়েছে একই প্রক্রিয়ায় রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দ্রুততার সঙ্গে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে চাই। এদিকে, সৌদি আরবে গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের কোয়ারেন্টিনে থাকাকালে হোটেল ভাড়া পরিশোধ করবে সরকার। এ বিষয়ে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রপমন্ত্রী। তিনি বলেন, সৌদি আরবে যারা যাচ্ছে তাদের হোটেলে কোয়ারেন্টিন থাকতে হচ্ছে। কারণ ওই দেশ নিয়ম করেছে, যারা সেখানে যাবে তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। আমাদের দেশ থেকে যাওয়া প্রবাসীদের কষ্ট দেখে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন তাদের হোটেলের থাকার খরচ যেন সরকার বহন করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে সব প্রবাসী সেখানে যাবেন, তাদের একটি তালিকা তৈরি করে সৌদি আরবে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া হবে। তিনি সেখানে তাদের থাকার ব্যবস্থার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এবং ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণায় ক্ষতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণে অনেক দেশ বাংলাদেশে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিচ্ছে। এ কে আবদুল মোমেন বলেন, এটি খুব দুঃখজনক, বাংলাদেশে মাত্র ১৩ জন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে। সম্ভবত একজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। তবে এর নেতিবাচক প্রচারণা অনেক বেশি হচ্ছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply