ক্রীড়া প্রতিবেদক ॥ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) ম্যাচ চলাকালীন সময় আউট না দেওয়ায় লাথি দিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে আবারও আলোচনায় সাকিব আল হাসান। খেলা স্বাভাবিক হলেও একটু পর অন্য প্রান্তে আবার দেখা গেল তার রুদ্রমূর্তি। এবার আম্পায়ারের সামনে গিয়ে তিন স্টাম্পই তুলে নিয়ে আছাড় মারলেন মাটিতে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে শুক্রবার দুপুরে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচে এ ঘটনা ঘটে। আবাহানীর লক্ষ্য ১৪৬ রানের। ৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে রীতিমত ধুঁকছে আবাহনী। নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুশফিকুর রহমান দলকে বিপদ থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন। মোহামেডানের তখন ৩ উইকেটে ২১ রান। পঞ্চম ওভারে বল হাতে তুলে নেন সাকিব আল হাসান। ওভারের পঞ্চম বলটিই আঘাত হানে আবাহনী অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম প্যাডে। সাকিব এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করেন, কিন্তু আম্পায়ার তাতে অনড়। কিন্তু এরপরই বিতর্কিত এক কা- ঘটিয়ে বসেন মোহামেডান অধিনায়ক। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট সাকিব রাগে ক্ষোভে স্ট্যাম্পে লাথি মেরে ননস্ট্রাইকের উইকেট ভেঙে ফেলেন। সেখানেই শেষ নয়। আম্পায়ারের দিকে রাগত স্বরে তাকিয়ে কিছু বলতে থাকেন। অনেকটা সময় এমন আচরণ করেন সাকিব। নাটকের দ্বিতীয় পর্ব ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলের পর। তখন বৃষ্টি শুরু হলে মাঠকর্মীদের দিকে ইশারায় কাভার আনতে বলেন আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান। সাকিব তখন আবার আম্পায়ারের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলতে থাকেন কিছু একটা। এরপর হুট করেই তিনটি স্টাম্পই তুলে আছাড় মারেন মাটিতে। এবারও আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক হয় তার। এবার একপর্যায়ে গিয়ে উপড়ে ফেলা স্টাম্পের একটি নিয়ে উল্টো করে আবার মাটিতে পোঁতার চেষ্টা করতে দেখা যায় তাকে। মাঠে উত্তপ্ত পরিস্থিতির শেষ পর্ব সাকিবরা মাঠ ছাড়ার সময়। আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকে অশালীন ভঙ্গি করেন তিনি। এ সময় আবাহনীর ড্রেসিং রুমের বাইরে থেকে তার দিকে কিছু বলতে বলতে এগিয়ে যান কোচ খালেদ মাহমুদ। তেড়ে আসেন সাকিবও। মোহামেডানের ক্রিকেটারদের কয়েকজন তখন থামান সাকিবকে। মাঠ ছাড়ার সময় মোহামেডানেরই শামসুর দৌড়ে আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকে গিয়ে থামান খালেদ মাহমুদকে। ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বল পর্যন্ত আবাহনীর সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৩১ রান। এমন সময় শুরু হয় বৃষ্টি। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা পর্যন্ত খেলা বন্ধ রয়েছে। ১৭ বলে ১৩ রান করে ক্রিজে আছেন শান্ত। ৮ বলে ১২ রান করছেন মুশফিক। গেল সপ্তাহে অনুশীলনের সময় জৈব সুরক্ষা বলয় (বায়ো-বাবল) ভাঙার অভিযোগ ছিল মোহামেডানের বিরুদ্ধে। দলীয় অনুশীলন না থাকলেও গেল ৪ জুন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব এককভাবে অনুশীলনে অংশ নেন। বিসিবি’র একাডেমি মাঠে সাকিবকে নিজ মালিকানাধীন মাস্কো ক্রিকেট একাডেমির দুই বোলার। যারা বিসিবির বায়ো-বাবলের বাইরের। অন্যদিকে সাদা শার্ট পরা এক ব্যক্তিকেও দেখা যায় অনুশীলনে, যিনি ক্রিকেটারদের সংস্পর্শে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) ভার্চ্যুয়ালি এক শুনানির আয়োজন করে। সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয় মোহামেডানকে। তাই শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটিকে।